মহিপুর মাতৃসদন সার্জিক্যাল ক্লিনিকের যাত্রা শুরু

পটুয়াখালীর মহিপুর বন্দরে মহিপুর মাতৃসদন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডা. নাঈমা কবীর। মঞ্চে বসা (বাঁ থেকে) মেজবাহ উদ্দিন মাননু, আবদুল বারেক মোল্লা, আবদুল মোতালেব তালুকদার, বিপুল চন্দ্র হাওলাদার ও আবদুস ছালাম আকন l ছবি: প্রথম আলো
পটুয়াখালীর মহিপুর বন্দরে মহিপুর মাতৃসদন সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ডা. নাঈমা কবীর। মঞ্চে বসা (বাঁ থেকে) মেজবাহ উদ্দিন মাননু, আবদুল বারেক মোল্লা, আবদুল মোতালেব তালুকদার, বিপুল চন্দ্র হাওলাদার ও আবদুস ছালাম আকন l ছবি: প্রথম আলো

স্বাস্থ্যসেবাবঞ্চিত মা-শিশুদের জন্য পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর বন্দরে গতকাল শুক্রবার চালু হয়েছে মহিপুর মাতৃসদন সার্জিক্যাল ক্লিনিক। ২০ শয্যার এই ক্লিনিকের উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. নাঈমা কবীর।
বেসরকারি পর্যায়ে এ প্রতিষ্ঠান চালু উপলক্ষে কেন্দ্রের চত্বরে গতকাল বিকেলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। নাঈমা কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার ও কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আবদুল বারেক মোল্লা। অতিথি ছিলেন মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম আকন, মিঠাগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শামসুল আলম, কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন মাননু প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রজন্ম-৭১-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা।
আবদুল মোতালেব তালুকদার বলেন, ‘কলাপাড়া, কুয়াকাটা, মহিপুরের মা এবং শিশুস্বাস্থ্যের চিকিৎসায় কষ্ট এবং ভোগান্তির শেষ ছিল না। আমার মনে হয় সেবাকেন্দ্রটি চালু হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি কমবে। দোরগোড়ায় বসে মানুষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ভালো চিকিৎসা পাবে।’
বিপুল চন্দ্র হাওলাদার বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ে গরিব-দুস্থ মানুষের সেবা করার লোক পাওয়া যায় না। সেদিক থেকে চিন্তা করলে নাঈমা কবীর অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ সেবাকেন্দ্র সাধারণ মানুষের সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আবদুল বারেক মোল্লা বলেন, ‘শুনেছি নাঈমা কবীর একজন ভালো চিকিৎসক। উপকূলের গর্ভবতী মা এবং শিশুস্বাস্থ্যসেবার জন্য তাঁর মতো একজন চিকিৎসকের প্রয়োজন ছিল।’
নাঈমা কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই অঞ্চলের নারীরা অনেক বেশি রক্ষণশীল, তাই আমরা সম্পূর্ণ নারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সেবিকাদের দ্বারা অস্ত্রোপচার, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ মানসম্পন্ন চিকিৎসা প্রদান, গর্ভকালীন জরুরি, সময়োপযোগী চিকিৎসার প্রয়োজনে গর্ভবতী মায়েদের তালিকা তৈরি করে সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে অগ্রসর ভূমিকা রাখতে চাই। এমনকি গর্ভবতী মায়েদের সন্তান প্রসবের সময় প্রয়োজনে আমরা তাৎক্ষণিক নিরাপদ রক্তদানের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করব।’ তিনি আরও বলেন, জরায়ুতে বাচ্চার আড়াআড়ি অবস্থান, গর্ভকালীন খিঁচুনি, উচ্চ রক্তচাপ, বাচ্চার গর্ভকালীন সঠিক অবস্থান নির্ণয়, গর্ভকালীন বাচ্চার অপুষ্টি ইত্যাদি চিহ্নিত করে, মাতৃমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এ সেবাকেন্দ্র ভূমিকা রাখবে।
২০০০ সাল থেকে নাঈমা কবীরের উদ্যোগে বরগুনার পাথরঘাটা, বামনা, আমতলী, পিরোজপুরের কাউখালী, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া এবং বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় এ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
নাঈমা কবীর মস্কো থেকে এমবিবিএস এবং প্রসূতি, স্ত্রীরোগের ওপর এমডি ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।