কোচিংয়ের টাকা দিতে না পারায় বের করে দেওয়ার অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় কোচিংয়ের টাকা না দিতে পারায় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার খোশকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করেছেন।
বিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খোশকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৩০৪। এর মধ্যে পঞ্চম শ্রেণিতে রয়েছে ৬৮ জন। বিদ্যালয়ে শিক্ষক আছেন ছয়জন। জানুয়ারি থেকে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিং করাচ্ছেন শিক্ষকেরা। এতে কোচিং বাবদ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০০ করে টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে এ কোচিং চলে। তবে বিদ্যালয় ছুটির পর পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন পৃথক প্রাইভেট পড়ান বলে জানান এলাকাবাসী। এতে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪০০ করে টাকা আদায় করেন প্রধান শিক্ষক।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলে, ‘সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত স্যারেরা কোচিং করায় আর ২০০ করে টাকা নেয়। বিকেলে স্কুল ছুটির পরে বিদ্যালয়েই হেড স্যার প্রাইভেট পড়ান। কেউ বাইরে পড়তে চাইলে বকাঝকা করেন হেড স্যার। প্রাইভেট পড়ানোর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪০০ করে টাকা নেন। কেউ টাকা না দিতে পারলে স্যার খুব খারাপ ব্যবহার করেন। টাকা দিতে না পারায় গত কয়েক দিনে কয়েকজনকে স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন স্যার।’
খোশকান্দি গ্রামের কুলসুম বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে আশরাফ মিয়া পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। কোচিং করাইতে হেড স্যার সবার কাছ থেইকা ২০০ কইরা টাকা নেয়। আমার অসুবিধার কারণে কোচিংয়ের টাকা দিতে না পারায় তাকে চার দিন ধইরা স্কুল থেকে বাইর কইরা দিতাছে। গতকাল (বুধবার) আমি গিয়া এ নিয়া স্যারের লগে ঝগড়া কইরা আইছি।’
অভিভাবক রেনু বেগম, পারভীন বেগম ও আয়েশা আক্তার বলেন, ‘আমরা কষ্ট কইরা টেকা জোগাড় কইরা ছেলেদের বিদ্যালয়ে কোচিংয়ের টেকা দিতাছি। এক মাসের টেকা না দেওনে আমাগোর ছেলেরারে স্কুল থেইকা হেড স্যারে বাইর কইরা দিছে।’
প্রধান শিক্ষক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয় ছুটির পরে ১৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রাইভেট পড়াই আমি। ছাত্ররা ২০০-৩০০ করে টাকা দেয়। ৪০০ করে টাকা কেউ দেয় না।’ তিন দাবি করেন, কোচিং করানো হয়, কিন্তু কারও কাছ থেকে কোনো টাকা নেওয়া হয় না। আর টাকার জন্য কোনো ছাত্রকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নৌসাদ মাহমুদ বলেন, ‘কোনো বিদ্যালয়ে কোচিং কিংবা প্রাইভেট পড়ানোর কোনো বিধান নেই। খোশকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোচিং ও প্রাইভেট পড়িয়ে টাকা আদায় এবং টাকার জন্য কোনো ছাত্রকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, এমনটি আমার জানা নেই। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’