জয়পুরহাটে মন্দিরে ভাঙচুর

জয়পুরহাটের বারো শিবালয় মন্দিরে শুক্রবার রাতে ভাঙচুর করা হয়। ছবিটি শনিবার তোলা। ছবি: প্রথম আলো
জয়পুরহাটের বারো শিবালয় মন্দিরে শুক্রবার রাতে ভাঙচুর করা হয়। ছবিটি শনিবার তোলা। ছবি: প্রথম আলো

জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেল আমলা বারো শিবালয় মন্দিরের ভেতরের ১২টি এবং মন্দিরের বাইরে ১টি শিবলিঙ্গ ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার রাতে মন্দিরে ঢুকে কে বা কারা পাথরের তৈরি শিবলিঙ্গে আগুন দিয়ে পরে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে প্রতিটি শিবলিঙ্গের কিছু অংশ ভেঙে ফেলেছে। হাজার বছরের পুরোনো ওই শিবলিঙ্গ ভেঙে ফেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

হেফাজতে ইসলাম গতকাল শুক্রবার বলেছে, দেশের কোথাও মূর্তি স্থাপন করা যাবে না এবং এই দেশে মূর্তি সংস্কৃতি চলবে না। বারো শিবালয়ে শিবলিঙ্গ ভাঙচুর তারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।

জয়পুরহাট সদর থানা-পুলিশ ও মন্দির কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতের যেকোনো সময় কে বা কারা মন্দিরে ঢুকে শিবলিঙ্গে আগুন দিয়ে এবং হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে প্রতিটি শিবলিঙ্গের মাথা ভেঙে ফেলে। মন্দিরের উঠানে থাকা একটি গরুর মূর্তি, তুলসীগাছের বেদিও ভাঙচুর করেছে। তুলসীগাছগুলো উপড়ে ফেলেছে। হনুমান মন্দিরের ফটকের বাইরে থেকে দড়ি দিয়ে হনুমানের মূর্তিটিও ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে।

মন্দিরের পুরোহিত সিতু চন্দ্র মোহন্ত বলেন, প্রতিদিনের মতো তিনি আজ সকাল ছয়টার দিকে পূজার ফুল নিয়ে মন্দিরের প্রধান ফটক খুলে দেখতে পান, হনুমান মন্দিরে হনুমানের মূর্তিতে দড়ি লাগানো। মন্দিরের অন্য দুটি ফটকেও তালা লাগানো। এ সময় তিনি মন্দির কর্তৃপক্ষের লোকজনকে মুঠোফোনে খবর দেন। তাঁদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই তালা ভেঙে মন্দিরে ঢোকে।

বেল আমলা বারো শিবালয় মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনিল কুমার আগরওয়ালা, জয়পুরহাট জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার খাঁ অভিযোগ করেন, হাইকোর্টের চত্বর থেকে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেওয়ার পর শুক্রবার হেফাজতে ইসলাম মূর্তি নিয়ে যেভাবে বিবৃতি দিয়েছে এবং এ মন্দিরে যেভাবে তাণ্ডব চালানো হয়েছে, এটা তারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন তাঁরা।

মন্দিরে ভাঙচুরের খবর পেয়ে জয়পুরহাট-১ আসনের সাংসদ সামছুল আলম, জেলা প্রশাসক মো. মোক্কামেল হক, পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে মন্দির কর্তৃপক্ষ মামলা করবে। তিনি আরও বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটকে পুলিশ মাঠে নেমেছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে।