ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিল পুলিশ

মাদারীপুরের শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে বেধড়ক পিটিয়ে বাঁ পা ভেঙে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীর নাম হাবি হাওলাদার। তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের টাকা খেয়ে এসআই সাইফুল ওই ঘটনা ঘটান।
অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফুল দাবি করেন, হাবি হাওলাদার বিএনপির দুই পক্ষের মারামারির একটি মামলার আসামি। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে গেলে ধস্তাধস্তি করেন। তখন পড়ে গিয়ে আহত হন। হাবি হাওলাদার উপজেলার মাদবরেরচর ইউনিয়নের কাওড়াকান্দি ফেরিঘাট এলাকার কুদ্দুস হাওলাদারের ছেলে। ফেরিঘাট এলাকায় হাবির নানা রকম জিনিস বিক্রির ছোট্ট একটি দোকান আছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তি জানান, গত শনিবার রাত ১০টার দিকে কাওড়াকান্দি ঘাটের ভিআইপি মোড়ে পুলিশ বক্সের কাছে একটি দোকানে বসে চা পান করছিলেন হাবি। ওই সময় শিবচর থানার এসআই সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তাঁকে আটক করে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। হাবি আটকের কারণ জানতে চাইলে এসআই সাইফুলসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা সবার সামনেই তাঁকে বেধড়ক পিটুনি দেন। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন হাবি। ওই অবস্থায় পুলিশ তাঁকে গাড়িতে উঠিয়ে শিবচর থানায় নিয়ে যায়।
শিবচর থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য জানান, থানায় চেতনা ফিরলে এসআই সাইফুল হাবির বুকে বেশ কয়েকটি লাথি মারেন। লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। এতে হাবির বাঁ পা ভেঙে যায়। ওই সময় থানার একাধিক পুলিশ সদস্যদের নিষেধ সাইফুল শোনেননি।নির্যাতনের একপর্যায়ে নিথর হয়ে পড়ে থাকেন হাবি। রাতেই তাঁকে শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান সাইফুল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকেরা হাবিকে ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন। খবর পেয়ে স্বজনেরা এলে সাইফুল থানায় চলে যান। স্বজনেরা হাবিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাবি হাওলাদারের স্ত্রীর বড় ভাই শাহ আলম মিয়া বলেন, হাবি হাওলাদারের সঙ্গে এলাকার একজনের জমাি নিয়ে বিরোধ আছে। তারাই পুলিশকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে হাবি হাওলাদার বলেন, ‘আমাকে পেটানোর সময় পুলিশের হাতে-পায়ে ধরে অনেক কান্নাকাটি করেছি। তার পরও আমাকে জুতা দিয়ে লাথি মারে। লাঠি দিয়ে শরীরের সব স্থানে পেটায়। বাঁ পা ভেঙে দেয়।’
জানতে চাইলে শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মাছুদ খান বলেন, ‘হাবি হাওলাদার নিয়মিত মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তাঁকে ধরতে গেলে পালানোর চেষ্টা করেন। তখন একটি বেঞ্চের ওপর পড়ে পায়ে ব্যথা পান। তাই তাঁকে থানায় না এনে আত্মীয়স্বজনের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।’