ব্যাগিং করা আম রপ্তানি নিয়ে উদ্বেগ

বিদেশে রপ্তানির আশায় ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর চাষিরা। পেকে যাওয়া আম দেখাচ্ছেন এক কৃষক। ছবিটি গতকাল দুপুরে তোলা l প্রথম আলো
বিদেশে রপ্তানির আশায় ব্যাগিং পদ্ধতিতে আম চাষ করে বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর চাষিরা। পেকে যাওয়া আম দেখাচ্ছেন এক কৃষক। ছবিটি গতকাল দুপুরে তোলা l প্রথম আলো

রাজশাহীতে ‘ব্যাগিং’ করা আম রপ্তানি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চাষিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। রাজশাহীতে প্রায় ১০০ চাষি এই পদ্ধতিতে আম চাষ করেছেন। গত ২৮ মে থেকে এই আম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য নেওয়ার কথা ছিল। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত রাজশাহী থেকে কোনো আম নেওয়া হয়নি।

রাজশাহীতে আমচাষিদের বিভিন্ন সমস্যা দেখার জন্য একটি সংগঠন রয়েছে। এর নাম রাজশাহী অ্যাগ্রো ফুড প্রডিউসার সোসাইটি। এই সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, এবার রাজশাহীতে প্রায় ১০০ চাষি ‘ফ্রুট ব্যাগিং’ পদ্ধতিতে আম চাষ করেছেন। এই আমের পরিমাণ হবে এক থেকে দেড় হাজার মেট্রিক টন। জেলার পবা, বাঘা, চারঘাট ও পুঠিয়া উপজেলায় এই পদ্ধতিতে আম চাষ করা হয়েছে। বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ করা এই আমের গায়ে কোনো দাগ থাকে না। এতে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না। স্বাস্থ্যসম্মত ও আকর্ষণীয় রঙের এই আম ইউরোপের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করার জন্য একটি সমিতি রয়েছে। এই সমিতির উপদেষ্টার সঙ্গে গত অক্টোবর মাসে রাজশাহী অ্যাগ্রো ফুড প্রডিউসার সোসাইটির চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২৮ মে থেকে ক্ষীরশাপাতি আম নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত রপ্তানিকারক সমিতির পক্ষ থেকে চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।

সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল হক বলেন, ক্ষীরশাপাতি আম পাকা শুরু হয়েছে। এক্ষুনি এই আম পাঠাতে না পারলে রাজশাহীর প্রায় ১০০ চাষি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তিনি আরও বলেন, একটি আম ব্যাগিংয়ের পেছনেই পাঁচ টাকা খরচ পড়ে। গত বছর তিনি ১০ টন আম এই পদ্ধতিতে চাষ করেছিলেন। এবার তাঁর নিজের ৩০ থেকে ৪০ মেট্রিক টন আম ব্যাগিং করা হয়েছে। আর রাজশাহীতে সব মিলে এক থেকে দেড় হাজার টন আম ব্যাগিং করা হয়েছে। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, ২৮ মে থেকে ক্ষীরশাপাতি, ৭ থেকে ১০ জুনের মধ্যে ল্যাংড়া ও ২০ জুন থেকে ফজলি আম নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত রপ্তানিকারকদের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দেবদুলাল ঢালী গতকাল বলেন, আম রপ্তানিকারক সমিতির সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। তাঁরা আগামী রোববার রাজশাহীর আমচাষিদের সঙ্গে দাম নির্ধারণ করতে আসবেন। দাম ঠিক হলেই আম নেওয়া শুরু করবেন।