হোমনায় ভুয়া সনদে চাকরির আবেদনের অভিযোগ

কুমিল্লার হোমনা উপজেলার তেভাগিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগ পেতে ভুয়া সনদ দিয়ে আবেদন করার অভিযোগ উঠেছে। ১৮ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত এ অভিযোগ করেন ওই গ্রামের মো. আবু মুছা নামের এক আবেদনকারী। এ বিষয়ে তদন্ত করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়ে ২১ মে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন ইউএনও।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ২৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগ দিতে গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি দেন ইউএনও। এতে তেভাগিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তেভাগিয়া গ্রামের চারজন আবেদন করেন। তাঁরা হলেন মো. এনামুল হক, বাদল মিয়া, জিয়াউর রহমান ও মো. আবু মুছা।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মো. এনামুল হক তেভাগিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন এবং চাকরি নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের বাঞ্ছারামপুর এস এম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণির ভুয়া সনদ নিয়ে আবেদনের সঙ্গে জমা দেন। বাদল মিয়া ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও রামকৃষ্ণপুর কেকে আরকে উচ্চবিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণির সনদ নেন। জিয়াউর রহমান চান্দেরচর সিনিয়র মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করছেন। তবে তা গোপন করে ঘনিয়ারচর উচ্চবিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পাসের সনদ নিয়ে জমা দেন। তাঁদের সনদ যাচাই-বাছাই করে দপ্তরি কাম প্রহরী নিয়োগ দিতে আবেদন করা হয়। ২ ও ৩ মে এসব বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে ১৩১ জন পরীক্ষায় অংশ নেন।

মো. আবু মুছা বলেন, ‘আবেদনের সঙ্গে যে সনদপত্র দেওয়া হয়েছে, আমি ছাড়া অন্য তিনজনের অষ্টম শ্রেণির সনদপত্রই ভুয়া। তাই আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

এনামুল হকের মুঠোফোনে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় জেনে তাঁর বাবাকে ফোন ধরিয়ে দেন। এনামুল হকের বাবা ফারুক মিয়াঅভিযোগ অস্বীকার করেবলেন, ‘আমার ছেলে বাঞ্ছারামপুর থেকে পড়ালেখা করেছে বলেই সে সেখান থেকে সনদ নিয়েছে।’

বাদল মিয়া বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক নয়। অভিযোগ তদন্ত করে সত্যটা বের করা হলে সবার জন্য ভালো।’

জিয়াউর রহমানের ভাই রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘জিয়াউর অষ্টম শ্রেণি পাস করেছে।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, ‘তেভাগিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে আবেদনকারীদের মধ্যে ভুয়া সনদধারী থাকার বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকরতে চিঠি পেয়েছি। যথাসময়ে তদন্ত করা হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শহিদুল ইসলাম বলেন, তেভাগিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে ভুয়া সনদে আবেদন করার বিষয়ে এক প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।