দলীয় নেতাদের দুষলেন পরিবারের সদস্যরা

রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মুক্তিযোদ্ধা অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় লোকজন।
গতকাল শুক্রবার অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যার অপহরণের দ্বিতীয় বার্ষিকীতে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।
গতকাল সকাল ১০টায় কাপ্তাই উপজেলা সদরের চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের বরইছড়িতে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি করে দলে নিজেদের অবস্থান ঠিক রাখতে দলীয় নেতাদের চক্রান্তে অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে।
অনিল তঞ্চঙ্গ্যার স্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা অভিযোগ করেন, তাঁরা জানতে পেরেছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা ও কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসু চাইন মারমা অনিলের অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন।
সান্ত্বনা চাকমা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সামনে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদারকে অনিলকে উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু দীপংকর তালুকদার রাঙামাটি এসে সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেননি বা প্রশাসনকে নির্দেশ দেননি। এসব জনবিচ্ছিন্ন ও দাম্ভিক নেতাদের কারণে আওয়ামী লীগ সংসদ নির্বাচনে হেরেছে। দলকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গেছে।’
অনিলের বড় ছেলে ঝন্টু বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘বাবাকে অপহরণের পর কেউ কোনো মুক্তিপণ দাবি করেনি। কারণ তাঁকে হত্যার উদ্দেশে অপহরণ করা হয়েছিল। আমরা নিশ্চিত, সরকারের বিভিন্ন পদে আসীনরাই তাঁদের সরকারি ও দলীয় পদ ধরে রাখতে আমার বাবাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছেন।’
ছোট ছেলে নান্টু বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা দুঃখ করে বলেন, ‘বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা, আওয়ামী লীগের নেতা ও জেলা দুর্নীতি দমন কমিটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু অপহরণের দুই বছরে বাবাকে সবাই ভুলে গেছেন। আজকের এই মানববন্ধনে এসব সংগঠনের কেউ আসেননি।’
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, ভাজ্যাতলী মৌজার হেডম্যান থোয়াই অং মারমা। রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা কৃষক লীগের সভাপতি অনিল চন্দ্র তঞ্চঙ্গ্য ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের নিজ বাড়ি থেকে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় যোগ দিতে রাঙামাটি শহরে আসার পথে অপহূত হন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, তিনি আর বেঁচে নেই। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও দল থেকে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।