পুষ্টির কাজে বৈষম্য ও সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট

দেশে পুষ্টি কার্যক্রমে বৈষম্য ও সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট ধরা পড়েছে। সাতক্ষীরা জেলায় ১৭টি পুষ্টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়িতে ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকারসহ এনজিওরা সারা দেশে ২০১টি পুষ্টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। সরকারের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের এক সমীক্ষায় এটা ধরা পড়েছে।
গতকাল শুক্রবার ‘নিউট্রিসন একটিভিটিস ম্যাপিং অ্যাক্রস সেক্টরস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সমীক্ষায় ফলাফল প্রতিষ্ঠানের মিলনায়তনে প্রকাশ করা হয়।
ইউএসএআইডির অর্থায়নে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফানটা-থ্রি ও আন্তর্জাতিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল এই সমীক্ষা করেছে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, সারা দেশে বাস্তবায়িত হচ্ছে এমন সরকারি ও বেসরকারি পুষ্টি প্রকল্প ২০১টি। এর মধ্যে সরকারি প্রকল্প ১০০টি। বেসরকারি উদ্যোগে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে তার মধ্যে গবেষণা প্রকল্প ৫৭টি।
দেখা গেছে, রংপুর ও উপকূলের জেলাগুলোতে পুষ্টি প্রকল্পের সংখ্যা বেশি। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলায় ১২টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। অন্যদিকে দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরায় ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় পুষ্টিবিদ নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, এনজিওরা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হককে সন্তুষ্ট করতে সাতক্ষীরায় নানা প্রকল্প হাতে নেয়।
সমীক্ষার ফলাফল উপস্থাপনার সময় হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনালের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মেরেডিথ জ্যাকসন বলেন, সরকার ছাড়া ১৬৬টি দেশি ও আন্তর্জাতিক এনজিও এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত করছে। তিনি বলেন, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে পুষ্টি প্রকল্পের সংখ্যা কম। অন্যদিকে এদেশে নারী ও কিশোরী পুষ্টি পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হলেও এ বিষয়ে কাজ হচ্ছে কম।
উপস্থাপনার শুরুতে জাতীয় পুষ্টিসেবার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ৩৬ শতাংশ শিশুর ওজন কম, ৪১ শতাংশ খর্বাকায় ও ১৬ শতাংশ কৃশকায়। তিনি বলেন, দেশের কোন অঞ্চলে, কারা, কত দিন ধরে পুষ্টিসেবা দিচ্ছে, তা জানার জন্য এই সমীক্ষা করা হয়েছে। জাতীয়ভিত্তিক এ ধরনের কাজ এটাই প্রথম।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের একাধিক পুষ্টি বিশেষজ্ঞ এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন, সমীক্ষায় বৈষম্য ও সমন্বয়হীনতার চিত্র ফুটে উঠেছে। এই উদ্যোগের ফলে পরিকল্পনা গ্রহণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় সহজ হবে। এখন সরকারের উচিত হবে কাজের সমন্বয় করা এবং পিছিয়ে পড়া এলাকায় কাজের উদ্যোগ নেওয়া।