পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, গুলিতে 'মাদক ব্যবসায়ী' নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার লতুয়ামুড়া গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি নিহত ও তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত ইব্রাহিম মিয়া (৩৫) উপজেলার লতুয়ামুড়া গ্রামের প্রয়াত সমরাজ মিয়ার ছেলে। পুলিশ দাবি করেছে, ইব্রাহিম মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর সহযোগীর গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সকালে তাঁর লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার লতুয়ামুড়া গ্রামের মোজাম্মেল মিয়া (২০), মোখলেছ মিয়া (৫০), সেলিম মিয়া (২০), মালু মিয়া (১৯), রফিক মিয়া (৬০), রফিক মিয়ার ছেলে জসিম উদ্দিন (২৫) ও নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী রানুয়ারা বেগম (৩০)। গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কসবা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল মহিউদ্দিন ও সুমন ঘোষ। তাঁদের কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

থানার পুলিশের ভাষ্যমতে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম দুজন কনস্টেবলকে নিয়ে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের লতুয়ামুড়া গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার বাড়িতে মাদক উদ্ধার করতে অভিযান চালান। ইব্রাহিমের ঘর থেকে ৬ কেজি গাঁজা জব্দ করেন তাঁরা। এ সময় ইব্রাহিম ও তাঁর স্ত্রী রানুয়ারা বেগমকে আটক করা হয়। তাঁদের থানায় আনার পথে ইব্রাহিম মিয়ার লোকজন পুলিশের ওপর আক্রমণ করে। এসআই রফিকুল ইসলামসহ তিন পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেন। তবে ঘটনাস্থলে সহযোগীদের গুলিতে ইব্রাহিম মারা যান।

পরে খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশের আরেকটি দল সেখানে যায়। সেখান থেকে ১৮ জনকে আটক করা হয়। পরে ১১ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তিনটি রামদা, একটি ধারালো দা ও শটগানের তিনটি কার্তুজ জব্দ করেছে।

সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এসআই আশরাফ কামাল বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০০-১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এ ছাড়া আহত এসআই রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে নিহত ইব্রাহিমের স্ত্রী রানুয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।

রানুয়ারা বেগম থানার হাজতে বলেন, পুলিশ রাতে তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে গাঁজা জব্দ করেছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তাঁর স্বামী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ তাঁকে (রানুয়ারা) ধরে রাস্তায় নিয়ে যায়। তখন ইব্রাহিমসহ কয়েকজন পুলিশের কাছ থেকে তাঁকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ সে সময় গুলি করে এবং তাঁর স্বামী মারা যান।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, মাদক উদ্ধার করতে গেলে ইব্রাহিমের লোকজন পুলিশকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন। সে সময় পুলিশ গুলি করেছে। তবে আসামিদের গুলিতেই ইব্রাহিম মারা গেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় চারটি মামলা করেছে।