বিটি বেগুন নিয়ে আরও গবেষণার তাগিদ

জিন সংযোজনের মাধ্যমে উৎপাদিত (বিটি) বেগুন মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কি না, সে বিষয়ে গবেষণার প্রয়োজন। বিটি বেগুন চাষে অনুমোদনের আগে স্বাধীন গবেষক, বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পর্যালোচনা, প্রতিবেদন তৈরি এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশের পক্ষে মত দিয়েছেন বক্তারা।
গতকাল শনিবার ‘বাংলাদেশে বিটি বেগুন: সম্ভাবনা ও সমস্যা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ মত দেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বক্তারা বলেন, ‘বিটি বেগুন বিষয়ে এখনো বিজ্ঞানসিদ্ধ সঠিক কোনো তথ্য আমরা পাইনি। এ নিয়ে গবেষণা শেষ হয়নি। তাই এটা নিরাপদ কিংবা নিরাপদ নয়, তা বলার সময় আসেনি। দেশের স্বাধীন বিজ্ঞানীদের নিয়ে কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় করা প্রয়োজন। গবেষক-বিজ্ঞানীরা জনস্বার্থে দেশবাসী ও সরকারকে সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করবেন।’
মূল বক্তব্যে রসায়নবিদ জাহেদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বিটি বেগুন জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে মানব দেহে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হতে পারে। দীর্ঘ গবেষণা ও পরীক্ষার পর ভারত ও ফিলিপাইনে এটা নিষিদ্ধ হয়েছে। বাংলাদেশে বিটি বেগুন পরীক্ষামূলক চাষে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
নয়া কৃষি আন্দোলনের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার বলেন, ‘দেশে বেগুনের চাহিদা পূরণ করে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। পশ্চিমা বিশ্বে জিএম (জেনেটিক্যালি মডিফায়েড) ফুড নিষিদ্ধ। কোনোভাবে রপ্তানিপণ্যে জিএম ধরা পড়লে পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের সব কৃষিপণ্য নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারে। তাড়াহুড়ো করে উৎপাদনের অনুমোদন দেওয়া যথাযথ হয়নি।’
সীমিত পরিসরে বিটি বেগুন পরীক্ষামূলকভাবে চাষের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এম কে সুলতান বলেন, বিটি বেগুন এই মুহূর্তে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে না। তিন বছরের মধ্যে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক ব্যবহার করা হবে না।
বাপার শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ উপকমিটির আহ্বায়ক এ এম মুয়াজ্জেম হুসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনায় উবিনিগের গবেষক এম এ সোবহান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আল আমিন, বি-সেফ ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি এ এন এম রেজাউল করিম, সিসউকের নির্বাহী পরিচালক শাকিউল মিল্লাত, বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল।