পাবনায় আট বছরের শিশুকে হত্যা

পাবনার সুজানগর উপজেলায় প্রথম শ্রেণির এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় শিশুটির বাবার সঙ্গে তাঁদের প্রতিবেশীর ঝগড়া হয়। এর জেরে শিশুটি খুন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

আহম্মদপুর ইউনিয়নের আলাদীপুর গ্রামে গত শনিবার এ ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া শিশুর নাম হাফিজুল ইসলাম (৮)। হাফিজুল গ্রামের রজব আলীর ছেলে। সে স্থানীয় চরগোবিন্দপুর প্রভাতি কিন্ডারগার্টেনে প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।

এ ঘটনায় হাফিজুলের বাবা রজব আলী বাদী হয়ে গতকাল রোববার তিনজনকে আসামি করে আমিনপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রজব আলী প্রামাণিক ও তাঁর প্রতিবেশী সেলিম মল্লিক ঢাকায় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। সেলিম মল্লিক মাঝেমধ্যেই রজব আলীর কাছ থেকে টাকা ধার নিতেন। এভাবে রজব আলীর কাছ থেকে সেলিম মল্লিক প্রায় ২৫ হাজার টাকা ধার নেন। পাওনা টাকা চাইতে গেলেই সেলিম মল্লিকের সঙ্গে রজব আলীর বিরোধ দেখা দেয়। বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়াও হতো। শনিবার বিকেলেও তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের দেওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বিকেলে রজব আলীর ছেলে হাফিজুল বাড়ির বাইরে বের হলে সেলিম মল্লিক তাঁকে অপহরণ করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে তিনি ও তাঁর মা-বাবা ছেলেটিকে হত্যা করেন ও ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখেন। এদিকে সন্ধ্যা থেকে হাফিজুলের স্বজনেরা তাকে খুঁজতে থাকেন।

রাত দুইটার দিকে সেলিমের বাবা দুলাল মল্লিক শিশুটির লাশ তুলে নিয়ে বাইরে ফসলের মাঠে ফেলতে যান। তখন স্থানীয় লোকজন তাঁকে দেখে ফেলেন। পরে লাশসহ দুলালকে আটক করে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ সেলিমের বাবা দুলাল ও মা জুবায়দা খাতুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে সেলিম পালিয়ে যান।

হাফিজুলের বাবা রজব বলেন, সেলিম তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়ে আর ফেরত দেননি। টাকা ফেরত চাইলে হুমকিধমকি দিতেন। তিনি আরও বলেন, ‘কয়ডা টাকার জন্যি ও আমার বুক খালি করছে। আমি এর বিচার চাই।’

আমিনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তাজুল হুদা বলেন, মামলায় সেলিম মল্লিক ও তাঁর মা-বাবাকে আসামি করা হয়েছে। সেলিমের মা-বাবাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সেলিমকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে। শিশুটির লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।