নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর আত্মহত্যা?

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার পশ্চিম কাউন্নারা গ্রামে গত সোমবার রাতে ইতি আক্তার নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে পশ্চিম কাউন্নারা গ্রামের আবদুর রহিমের মেয়ে ইতির (১৮) সঙ্গে একই উপজেলার মালশি গ্রামের গ্রামের মোতালেব হোসেনের ছেলে ইউসুফ আলীর সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলে ইতি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়। প্রায় সাত মাস আগে পারিবারিকভাবে তাঁদের বিয়ে হয়। ইতির অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিয়ের দুই সপ্তাহ পর শ্বশুরবাড়ির চাপে তাঁর গর্ভপাত ঘটানো হয়। এরপর থেকে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। এ কারণে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন ইতিকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন।
সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান আলী বলেন, গত সোমবার রাত আটটার দিকে পশ্চিম কাউন্নারা গ্রামে ইউসুফের মামাবাড়িতে সালিস বৈঠক বসে। কিন্তু সালিসে কোনো মীমাংসা হয়নি। এরপর থেকে ইতিকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। সোমবার রাত ১১টার দিকে বাবার বাড়ির অদূরে একটি ধানখেতে ইতিকে পড়ে থাকতে দেখেন স্বজনেরা। তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে খবর পেয়ে রাত পৌনে একটার দিকে হাসপাতাল থেকে ইতির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
ইতির বাবা আবদুর রহিম বলেন, ‘আমার মেয়েরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাঁচতে দেয় নাই। আমি এর বিচার চাই।’
এ ঘটনার পর থেকে ইতির শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। চেষ্টা করেও ইউসুফের মুঠোফোন নম্বর পাওয়া যায়নি।
সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর রহমান বলেন, ওই গৃহবধূ কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে এর ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।