আ.লীগ-বিএনপির কোটি টাকার কাজ ভাগাভাগি

পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীতে গতকাল সোমবার সমঝোতার ভিত্তিতে প্রায় দেড় কোটি টাকার কাজ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ভাগাভাগি হয়েছে। ২০টি ঠিকাদারিকাজের মধ্যে আওয়ামী লীগ ১৭টি ও বিএনপি তিনটির কাজ পেয়েছে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী, খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সৈয়দপুর, পার্বতীপুর, রাজবাড়ী, মোবারকগঞ্জসহ পাকশী রেল বিভাগের বিভিন্ন স্টেশন, বাসাবাড়ি-নর্দমা সংস্কার ও মেরামতের জন্য মোট ২০টি গ্রুপে দরপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল গতকাল। এই কাজের জন্য বরাদ্দ প্রায় দেড় কোটি টাকা। এর মধ্যে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২-এর দপ্তরে ১০টি এবং বিভাগীয় প্রকৌশলী-১-এর দপ্তরে ১০টি কাজ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ঠিকাদারেরা জানান, সকাল সোয়া ১০টার দিকে এক ঠিকাদার (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১-এর কার্যালয়ে দরপত্র দাখিল করতে গেলে ১৫-২০ জন যুবক তাঁকে বাধা দেন। বাধা উপেক্ষা করে তিনি একটি দরপত্র বাক্সে দাখিল করতে গেলে ওই যুবকেরা তাঁকে কার্যালয়ের মধ্যেই মারধর করেন ও তাঁর দরপত্রগুলো ছিনিয়ে নেন।
ওই ঠিকাদার জানান, যুবকেরা তাঁর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া দরপত্রগুলো পাকশী আমতলায় কাবিল নামে এক ব্যক্তির পানের দোকানে রেখে চলে যান।
তবে দরপত্র ক্রয় করেও দাখিল করতে পারেননি এমন দুজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁরা ভয়ে দরপত্র দাখিল করেননি। তাঁদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী ঠিকাদারেরা একত্রিত হয়ে পাকশী রেলের সব কাজ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
বঞ্চিত ঠিকাদারেরা জানান, দরপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার পর বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিপন্থী ঠিকাদারেরা পাকশীর একটি ঘরে সমঝোতা বৈঠক করেন। এ সময় সমঝোতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ ১৭টি ও বিএনপি তিনটি কাজ নেয়। বৈঠকে আওয়ামী লীগের পক্ষে পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হবিবুল ইসলাম ও বিএনপির পক্ষে ছিলেন জেলা বিএনপির মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক নেফাউর রহমান।
এ ব্যাপারে হবিবুল ইসলাম জানান, তাঁরা কোনো অনিয়ম করেননি। বাকি কথা পরে বলবেন বলে তিনি ফোন রেখে দেন। নেফাউর রহমান জানান, তিনি বৈঠকের শেষ ভাগে উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁর নামে কোনো কাজ বরাদ্দ হয়নি।
পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ মাসউদুর রহমান জানান, ওই ঠিকাদারকে মারধরের সময় তিনি কার্যালয়ে ছিলেন না। তবে বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন।
পাকশী পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী শহর উপপরিদর্শক মানিকুজ্জামান জানান, ঠিকাদারকে মারধর করার পর তাৎক্ষণিকভাবে বসে কাজ ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়।