সড়কে এখনো ধ্বংসস্তূপ

রাঙামাটি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি সড়কে গাছ ও মাটি পড়ে থাকায় এখনো যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। রাঙামাটি শহর থকে ১৬ কিলোমিটার দূরে খামারপাড়ায় এবং সাড়ে ১৮ কিলোমিটার দূরে মনতলা কিজিং এলাকায় পাহাড়ধসে বিলীন হয়ে গেছে এই সড়কের দুটি অংশ। সড়কের ওই অংশের আড়াই কিলোমিটারে এখনো ছড়িয়ে আছে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন।

গতকাল শনিবার সকাল নয়টায় খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙামাটি খামারপাড়া ও মনতলা কিজিং এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এই চিত্র। রাঙামাটি শহর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে খামারপাড়ায় দেখা হয় বন বিভাগের কর্মচারী মো. আবদুস সোবহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, খাগড়াছড়ি শহর থকে ভোর ছয়টায় রাঙামাটির উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সড়ক ভাঙা বলে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মনতলা কিজিং এলাকায় এসে নেমে যেতে হয়। এরপর স্ত্রী, মেয়ে ও দুই নাতনি নিয়ে আড়াই কিলোমিটার হেঁটেছেন। সড়কে পড়ে থাকা মাটি ও গাছ ডিঙিয়ে খামারপাড়া এসে পৌঁছে আবার অটোরিকশা পেয়েছেন। এই অটোরিকশা নিয়েই যাবেন রাঙামাটি শহরে।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জানিয়েছে, পাহাড়ধসের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পর সওজ কর্তৃপক্ষ কেবল সড়কের এই অংশের ৩০০ থেকে ৪০০ গজ এলাকার মাটি সরাতে পেরেছে। যোগাযোগব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে আরও এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

শুধু যাত্রীরা নয়, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় রাঙামাটি-মহালছড়ি সড়কের দুপাশে বসবাসরত পাহাড়িরা চরম বিপদে পড়ছেন। তাঁদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে দ্বিগুণ খরচ হচ্ছে।

রাঙামাটি-মহালছড়ি সড়কের ঘিলাছড়ি এলাকার শান্তি বিজয় চাকমা বলেন, ‘আমরা আগে একটি কলার কাঁদি ২০ টাকা দিয়ে রাঙামাটি শহরে নিয়ে যেতে পারতাম। এখন শুধু আড়াই কিলোমিটার রাস্তা কাঁধে করে নিতে লাগছে ২৫ টাকা। আর অটোরিকশা ভাড়াও দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।’

নানিয়ারচর উপজেলা কুতুকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কানন চাকমা বলেন, রাঙামাটির সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি সড়কের দুপাশে বসবাসরত অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। তাঁরা উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছেন না।

রাঙামাটি সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এমদাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙামাটি সড়কে রাঙামাটি থেকে ১৬ থেকে ১৮ কিলোমিটার অংশে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে সড়কের কিছু অংশ ১৩ ফুট পর্যন্ত মাটি জমে আছে। এ ছাড়া দুই স্থানে সড়ক নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ সচল করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।