নির্বাচনী সহিংসতার জেরে তরুণকে কুপিয়ে জখম

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের বহলাডাঙ্গা গ্রামে গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে এক তরুণকে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ওই তরুণের নাম সবুজ মণ্ডল (২০)। তিনি সরিষা ইউনিয়নের বহলাডাঙ্গা গ্রামের মধ্যপাড়া গ্রামের সিরাজ মণ্ডলের ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ইউপি নির্বাচনে সরিষা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দল থেকে মনোনয়ন চান। নির্বাচনে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমল আল বাহার বিশ্বাসকে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন তৎকালীন চেয়ারম্যান ও ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সোবহান। মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটতে থাকে। ৭ মে পাংশা উপজেলার সরিষা ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী আজমল আল বাহার বিশ্বাস বিজয়ী হন। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলতেই থাকে। গত ২৮ জুন সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বর্তমান চেয়ারম্যানের সমর্থক মিজানুর রহমান শেখ বাদী হয়ে ৩৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। গত রোববার আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান বলেন, সবুজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বহলাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মুদিদোকানের সামনে বসে ছিলেন। এ সময় আলী জামানের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল তাঁকে ঘেরাও করে। সেখান থেকে তাঁকে ধরে নিয়ে পাশের মেহগনিবাগানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়। পরে তাঁকে উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আলী জামান। তিনি বলেন, ‘প্রায় ছয় মাস আগে আমি জেল থেকে বের হয়েছি। শারীরিকভাবেও অসুস্থ। বাজারে চালের ব্যবসা করি। আমি মারধর করার সময় ছিলাম না।’

পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সিদ্ধার্থ শংকর বিশ্বাস বলেন, সবুজের হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। রাতেই তাঁকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

পাংশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ‘মারধরের ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে থানায় কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’