বছরের পর বছর গেলেও রহস্য উদ্ঘাটন হয়নি

দিনাজপুরের বিরামপুরে গত তিন বছরে সংঘটিত চারটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। চিহ্নিত করা যায়নি প্রকৃত অপরাধীদের। এ কারণে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের পরিবার হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

বিরামপুর থানার দেওয়া তথ্যমতে, চাঞ্চল্যকর চারটি হত্যাকাণ্ড হলো ২০১৪ সালের বিরামপুর পৌর শহরের ঘাটপাড় মহল্লার লুৎফর রহমান
হত্যাকাণ্ড, ২০১৫ সালের খানপুর ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের নবিনুর রহমান হত্যাকাণ্ড, সারঙ্গপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন হত্যাকাণ্ড
এবং জোতবানী ইউনিয়নের চকশুনবন গ্রামের আবদুর রউফ হত্যাকাণ্ড।

মামলাগুলোর মধ্যে লুৎফর রহমানের হত্যাকাণ্ডটি বর্তমানে পিবিআই এবং বাকি তিনটি হত্যা মামলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে।

মামলার এজাহার এবং নিহত ব্যক্তিদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে নিজ বাড়িতে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় কৃষক লুৎফর রহমান ওরফে লুতু মিয়াকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পুলিশ এ মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পারেনি। মামলাটি গত বছরের ২১ জুন পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গতকাল সোমবার লুৎফর রহমানের স্ত্রী মোসলেমা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন বছর হয়ে আলো। পুলিশ তো কিছুই করবা পারল না। এখন মাঝেমধ্যে দিনাজপুর থেকে আসে আর হামারতেই শুনবা চায় কে মারল। হারা পার্বতীপুরের খলিলপুরের হালিমের কথা কই। কিন্তু ওক পুলিশ কিছুই কয় না।’

২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল রাতে খানপুর ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে নবিনুর ইসলামকে দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে কিছু দূরে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ কূপের মধ্যে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় নবিনুরের ছোট ভাই ইসাহাক আলী বাদী হয়ে বিরামপুর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বিরামপুর থানায় মামলা করে।

গতকাল ইসাহাকআলীবলেন, ‘দুই বছর পার হলো। পুলিশ কিছুই জানবা পারল না।’

২০১৫ সালের ৫ আগস্ট রাতে পৌর শহরের কৃষ্টচাঁদপুর এলাকায় শাখা যমুনা নদীর ধারে জসিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জসিমের ছেলে মশিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি তদন্ত করছে। গত বছরের ৫ এপ্রিল রাতে জোতবানী ইউনিয়নের চকশুলবন গ্রামের পান ব্যবসায়ী আবদুর রউফ মণ্ডলকে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশের শালবনে ফেলে রাখা হয়। পরের দিন পুলিশ রউফের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে।

সিআইডি দিনাজপুর কার্যালয়ের পরিদর্শক মনসুর রহমান বলেন, সিআইডির তদন্তে সময় একটু বেশিই লাগে। দেরি হলেও সব সময় প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়।

পিবিআই দিনাজপুর জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মধুসুধনরায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘পিবিআই সব সময় নিরপরাধ ব্যক্তিকে কোনোভাবেই হয়রানি না করে প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় নিতে কাজ করে। লুৎফর রহমানের মামলাটি ক্লুলেস। তাই সময় একটু বেশি লাগছে।’