আবারও সংকেতব্যবস্থায় ত্রুটি, ছয় ট্রেন দেরিতে চলেছে

স্বয়ংক্রিয় সংকেতব্যবস্থায় (অটোমেটিক সিগন্যালিং সিস্টেম) ত্রুটির কারণে আবারও ট্রেনের সময়সূচি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে সুবর্ণ এক্সপ্রেসসহ চারটি ট্রেন বিলম্বে কমলাপুর স্টেশনে আসে। আর কমলাপুর থেকে ছাড়ার অপেক্ষায় থাকা দুটি ট্রেন সময়মতো চলতে পারেনি।

গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে সংকেতব্যবস্থা বিকল থাকে। এর আগে গত ২০ জুন প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা সংকেতব্যবস্থা বিকল ছিল। সেই দিন ২৩টি ট্রেন সময় মেনে চলতে পারেনি। এর প্রভাব পড়ে ঈদযাত্রায়। গত মে ও জুন মাসেও তিনবার সংকেতব্যবস্থা বিকল হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ২০ জুন পুরো কন্ট্রোল প্যানেল বন্ধ হয়ে যায়। এবার কন্ট্রোল প্যানেল চালু ছিল, কিন্তু সংকেত কাজ করছিল না। সব সংকেত বাতি লাল হয়ে যাচ্ছিল। সাধারণত লাল বাতি থেকে হলুদ ও সবুজ হলেই ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া রেললাইনের জোড়াতে ট্রেন এক লাইন থেকে আরেক লাইনে যাওয়ার জন্য যে ব্যবস্থা, সেটাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করছিল না। রেলের কর্মীরা নিজেদের হাতেই (ম্যানুয়াল) তা চালিয়েছেন।

রেলওয়ে সূত্র বলেছে, কমলাপুরসহ বড় জংশনগুলোতে অসংখ্য লাইন আছে। আসা ও যাওয়ার পথে ট্রেনগুলো একাধিক লাইন পরিবর্তন করে প্ল্যাটফর্মে আসে। লাইন পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় কিছু জোড়ার ‘পয়েন্টসের’ মাধ্যমে। এই জোড়াগুলোতে রেলপাতগুলো এমনভাবে বসানো যে স্টেশনমাস্টার চাইলে ইচ্ছামতো লাইনে ট্রেন নেওয়া যায়। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় নিয়ন্ত্রণকক্ষে থাকা বোর্ডের সুইচ টিপে। গতকাল সুইচ টিপে তা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাই বিকল হয়ে যায়।

রেলে রক্ষিত তথ্য থেকে জানা যায়, সংকেতব্যবস্থা কাজ না করার কারণে গতকাল সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি এক ঘণ্টা দেরিতে কমলাপুরে আসে। ট্রেনটি ঢাকা সেনানিবাস স্টেশনে আধা ঘণ্টা, তেজগাঁও ও কমলাপুর স্টেশনের কাছাকাছি ১৫ মিনিট করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস—এই দুটি ট্রেন ঢাকা থেকে কোনো বিরতি না দিয়েই চট্টগ্রামের পথে চলে। এই ট্রেন দুটি সময়মতো চলাচল করে থাকে।

সংকেতব্যবস্থায় ত্রুটির কারণে গতকাল জামালপুর কমিউটার ও সুরমা মেইল এক ঘণ্টারও বেশি দেরিতে ঢাকায় পৌঁছায়। ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেন আসে ৫০ মিনিট দেরিতে। আর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ও চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেন প্রায় আধা ঘণ্টা দেরিতে ছেড়ে যায়।

জানতে চাইলে রেলের ঢাকা বিভাগীয় ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) গাউছ আল মুনীর প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টির কারণে সংকেতব্যবস্থায় ত্রুটি হয়েছে। তবে এর জন্য বড় ধরনের সমস্যা হয়নি বলে তিনি দাবি করেন।