বেড়াতে এসে খালাতো ভাইকে গুলি করে হত্যা!

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার মারিয়া গ্রামে গতকাল রোববার শয়নকক্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। বাড়িতে বেড়াতে এসে এক খালাতো ভাই তাঁকে গুলি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিহত তরুণের নাম সাদ্দাম হোসেন (২৬)। তিনি মারিয়া গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে। তাঁর খালাতো ভাইয়ের নাম রিপন আহমেদ (১৯)। তিনি নাটোরের সিংড়া উপজেলার খোন্দকার বরবড়িয়া গ্রামের মৃত তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। তিনি বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা ইব্রাহীম হোসেন ওরফে সবুজ হত্যা মামলার আসামি। রিপন নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করতেন। তিনি আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ও সবুজ হত্যা মামলার আরেক আসামি বেনজির আহমেদের ছোট ভাই।

নিহত সাদ্দাম হোসেনের কয়েকজন প্রতিবেশী বলেন, খালাবাড়ির সঙ্গে রিপনের খুব ভালো সম্পর্ক। তিনি প্রায়ই খালার বাড়িতে বেড়াতে আসতেন। গতকাল সকালে এসে তিনি সাদ্দামের সঙ্গে একঘরে শুয়ে ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ ঘরে গুলির শব্দ হয়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই রিপন ঘর থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যান। অন্যরা ঘরে এসে গুলিবিদ্ধ সাদ্দামকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।

পলাতক থাকায় এ বিষয়ে রিপন আহমেদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ নিয়ে সাদ্দাম হোসেনের পরিবারের সদস্যরাও তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, সাদ্দাম হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে রিপন আহমেদ পালিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এর কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রিপন আহমেদ গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সরকারি আজিজুল হক কলেজের পুরাতন ভবনের সামনে ভাড়া নিয়ে বিতণ্ডার জের ধরে এক রিকশাওয়ালাকে মারধর করেন। এ নিয়ে কলেজের সামনের বৃন্দাবনপাড়া যুবলীগের এক নেতা ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে রিপনের বড় ভাই বেনজির আহমেদের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ইব্রাহীম হোসেন ওরফে সবুজ (২১) ছুরিকাঘাতে নিহত হন। এর পরদিন সবুজের পরিবার শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, ছাত্রলীগের নেতা বেনজির আহমেদ, রিপন আহমেদসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বেনজির আহমেদকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে।

গতকালের ঘটনার ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর রাজ্জাক ও সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার রায় বলেন, বেনজিরকে আজীবন বহিষ্কারের পর থেকে রিপন সংগঠনে নিষ্ক্রিয়। তাঁর সঙ্গে ছাত্রলীগের সম্পৃক্ততা নেই। তা ছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি পারিবারিক। এর সঙ্গে ছাত্রলীগকে জড়ানো ঠিক না।