ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে ১৭ লাখ টাকা ছিনতাই

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় গত মঙ্গলবার গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ পরিচয়ে হামিদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় হামিদুর গতকাল বুধবার অজ্ঞাতপরিচয় ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।

এদিকে দিনাজপুরের বিরামপুরেগতকাল ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বায়েন উদ্দিন (৬৫) ও আমিনুল ইসলাম (৫০) নামের দুই গরু ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে সাত লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে।

হামিদুর ব্যবসায়ী আইয়ুব হোসেনের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। মহাদেবপুর উপজেলার মাতজী হাটে ধান কেনাবেচার ব্যবসা করেন আইয়ুব।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, হামিদুর মঙ্গলবার পত্নীতলার নজিপুর মার্কেন্টাইল ব্যাংক শাখা থেকে ১০ লাখ টাকা তুলে বাসে করে মাতাজী ফিরছিলেন। বাসটি বেলা তিনটার দিকে নজিপুর পৌরসভার নুরজাহান ফিলিং স্টেশনের কাছে পৌঁছালে কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে একদল লোক বাসটির গতিরোধ করে। ডিবি পরিচয়ে তল্লাশি করার কথা বলে বাসে ওঠে তারা। এ সময় তারা হামিদুরকে মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে বাস থেকে নামিয়ে নেয়। তাঁর চোখ বেঁধে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। তারা হামিদুরকে মারধর করে ১০ লাখ টাকা ও একটি মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে জয়পুরহাটের তালপুকুর এলাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে নামিয়ে দেয়। মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।

জেলা ডিবির পরিদর্শক জাকিরুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন। এর আগেও একটি চক্র এভাবে টাকা ছিনতাই করেছে। ওই চক্রের সদস্যদের ধরার চেষ্টা চলছে।

এদিকে বিরামপুরের জোয়লকামড়া এলাকায় গতকাল যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে গরু ব্যবসায়ী বায়েন ও আমিনুলকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে সাত লাখ টাকা ছিনতাই করা হয়। ছিনতাইকারীদের মারধরে আহত আমিনুল নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

বায়েন ও আমিনুল নবাবগঞ্জের মোগড়পাড়া (জগদিশপুর) গ্রামের বাসিন্দা।

বায়েন বলেন, নোয়াখালীর গরু ক্রেতারা ইসলামী ব্যাংক বিরামপুর শাখায় টাকা পাঠান। দুপুর ১২টার পর তিনি ও আমিনুল বিরামপুর ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে নবাবগঞ্জের ভাদুরিয়া এলাকার ধান ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের হিসাব থেকে সাত লাখ টাকা উত্তোলন করেন। টাকা নিয়ে যাত্রীবাহী বাসে করে ভাদুরিয়া যাচ্ছিলেন। বাসটি বিরামপুর রেলঘুমটি পার হওয়ার পর সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস বাসটির পথরোধ করে। এ সময় ডিবি পোশাক পরা প্রত্যেকের কোমরে পিস্তল থাকা পাঁচ ব্যক্তি তাঁকে ও আমিনুলকে জেএমবি সদস্য বলে বাস থেকে নামিয়ে নেয়। পরে তাঁদের চোখ বেঁধে তারা নিয়ে যায়।

আমিনুল বলেন, মাইক্রোবাসে তুলে ছিনতাইকারীরা দুজনকে মারধর করতে থাকে। তাঁকে (আমিনুল) লাঠি দিয়ে বেদম পেটায়। এ সময় তাঁদের কাছে থাকা সাত লাখ টাকা ও একটি মুঠোফোন নিয়ে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থানার হাঁটুভাঙ্গা এলাকায় তাঁদের ফেলে দিয়ে তারা চলে যায়।

জানতে চাইলে দিনাজপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ডিবি পুলিশের কোনো দল গতকাল বিরামপুরে যায়নি। এ ছাড়া ডিবি অভিযানে গেলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করে।