দুর্নীতির অভিযোগে উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে পিরোজপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ ট্রাইব্যুনাল জজ আদালতে উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি আতিয়ার রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মো. গোলাম কিবরিয়া মামলাটি আমলে নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরিশাল কার্যালয়কে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) চারটি দরপত্রের মধ্যে ২, ৩ ও ৪ নম্বর প্যাকেজের ২২ লাখ টাকার আটটি কাজের জন্য মুন্না এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শতকরা ১০ ভাগ নিম্ন দরে দরপত্র জমা দেন। গত ১১ জুন উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া মুন্না এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ না দিয়ে সমদরে দরপত্র জমা দেওয়া তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেন। ওই কাজের জন্য মুন্না এন্টারপ্রাইজ শতকরা ১০ ভাগ নিম্ন দরে দিয়ে দরপত্র জমা দিলেও উপজেলা প্রকৌশলী নিজে লাভবান হয়ে সমদরে দরপত্র জমা দেওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যাদেশ দেওয়ায় সরকারের ২ লাখ ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়। এ ছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এডিপির অর্থায়নে উপজেলার মাটিভাঙ্গা বাজার মসজিদসংলগ্ন নদীতে পাকা ঘাট নির্মাণের কাজ না করে উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন মিয়া ১ লাখ ৪৫ টাকা তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহ আলম বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দুদককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার বাদী মুন্না এন্টারপ্রাইজের ব্যবসায়ী অংশীদার আতিয়ার রহমান চৌধুরী আরও অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন মিয়ার বাড়ি ফরিদপুরে। তিনি এক মন্ত্রীকে তাঁর মামা পরিচয় দিয়ে কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একের পর এক অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামে স্বপন দাড়িয়ার বাড়ির সংলগ্ন খালের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ১ কোটি ৭০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০ মিটার দীর্ঘ একটি গার্ডার সেতু নির্মাণে নকশা জালিয়াতি করে সেতুর ২০ মিটার গভীরতার ৫৬টি পাইলিংয়ের প্রতিটিতে ২০ এমএম ও ১২ এমএম রডের পরিবর্তে ১৬ এমএম ও ৮ এমএম রড ব্যবহার করা হয়েছে। এলজিইডির অর্থায়নে উপজেলার নাওটানা লোহার সেতুটি দুই বছর আগে বালুবোঝাই জাহাজের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেতু মেরামতের জন্য কার্গোর মালিকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়। কিন্তু সেতু মেরামত না করে ওই টাকা আত্মসাৎ করেছেন উপজেলা প্রকৌশলী।

উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন মিয়া বলেন, মুন্না এন্টারপ্রাইজ ১০ ভাগেরও কম দরে দরপত্র জমা দেওয়ায় কার্যাদেশ পাওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানটি বিবেচিত হয়নি। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে করা দুর্নীতি মামলাসহ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।