পাঠ দিতে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের এ কী কাণ্ড!

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুই ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে।

গতকাল বুধবার অভিযোগের তদন্ত করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার ওই তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার (ডিপিইও) কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই ছাত্রীদের অভিভাবকেরা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ৫ জুলাই।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ৫ জুলাই প্রধান শিক্ষক পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান করতে যান। একপর্যায়ে তিনি ক্লাসের দুজন ছাত্রীর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। এতে ছাত্রীরা বিব্রতবোধ করে। ঘটনাটি শ্রেণিকক্ষের অন্যান্য শিক্ষার্থীও দেখে ফেলে। পরে বাড়ি গিয়ে ওই দুই ছাত্রী বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের জানায়।

শ্লীলতাহানির শিকার এক ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, এ ঘটনার আগেও ওই প্রধান শিক্ষক পঞ্চম শ্রেণির আরও ছয়-সাতজন ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করেন। ঘটনা ফাঁস না করার জন্য তিনি ওই ছাত্রীদের নানাভাবে হুমকি দেন। তাঁর হুমকিতে অনেক ছাত্রী বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। তিনিসহ পাঁচ অভিভাবক এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। ওই ব্যক্তি শিক্ষক নামের কলঙ্ক। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়টির পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী বলে, ‘হেড স্যার আমাগো লগে প্রায়ই এমন করতেন। লজ্জায় এত দিন কাউরে কিছু কই নাই। এহন উপায় না দেইক্কা কইলাম। তয়, স্যারের বিচার হওয়া দরকার।’

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি ওই প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে যেতে নিষেধ করেন। এরপর তিনি (প্রধান শিক্ষক) বিদ্যালয়ে আসেন না। একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক প্রথম আলোর কাছে এসব অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, যা ঘটেছে তা সব সত্য। এ জন্য তিনি অনুতপ্ত। ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবেন না।

এ অভিযোগের তদন্ত করেছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. জুলফিকার আলী জনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার তদন্তের প্রতিবেদন ডিপিইওর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

চাঁদপুরের ডিপিইও মো. খোরশেদ আলম বলেন, ওই ঘটনার তদন্ত-প্রতিবেদন তিনি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।