দরজায় তালা, জ্বলছে বাতি

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিট। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার পাঙ্গাসী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয়। দরজায় তালা। ভেতরে কেউ নেই, তবু বাতি জ্বলছে। ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে গতকাল হঠাৎ পরিদর্শনে এসে এ দৃশ্য দেখলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইকবাল আখতার।
এই কার্যালয়ে ভূমি সহকারী কর্মকর্তার দায়িত্বে রয়েছেন এস এম বারকুল্লাহ আজীম। এ ছাড়া অফিস সহায়ক হিসেবে রয়েছেন হাবিবুর রহমান ও বীণা রানী দাস।
ইউএনও কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কার্যালয়টির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করার অভিযোগ রয়েছে। গতকাল ইউএনও ইকবাল আখতার সরেজমিনে এ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। গতকালও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে সেবা নিতে আসা কয়েকজন এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।
মনোহরপুর গ্রামের জুবায়ের আলম বলেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ভূমি অফিসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু কোনো লোকজন নেই।’ রামেশ্বরগাতী গ্রামের মনিরুজ্জামান বলেন, এখানকার লোকজন প্রায়ই এমনভাবে অফিস রেখে হাওয়া হয়ে যান। একই অভিযোগ করেন সেখানে জড়ো হওয়া আরও পাঁচজন।
কিছুক্ষণ পর কার্যালয় ঝাড়ু দেওয়ার কাজে নিযুক্ত চান বিবির ভাই পরিচয়ে জহর আলী নামের একজনের কাছে কার্যালয়ের চাবি পাওয়া যায়। তখন ইউএনও কার্যালয়টির ভেতরে প্রবেশ করেন। পরে তিনি ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এস এম বারকুল্লাহ আজীমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন।
ইউএনও ইকবাল আখতার বলেন, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তিনি অফিস সহায়ক বীণা রানী দাসকে নিয়ে আদালতে গেছেন হাজিরা দিতে। আরেক অফিস সহায়ক হাবিবুর রহমান কার্যালয় তালাবদ্ধ করে খাজনা আদায় করতে গেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
ইউএনও প্রথম আলোকে বলেন, মুভমেন্ট রেজিস্টারে কারও স্বাক্ষর ছিল না। এ ছাড়া গত দুদিন হাজিরা খাতায় ভূমি সহকারী কর্মকর্তার স্বাক্ষর নেই। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একপর্যায়ে অফিস সহায়ক হাবিবুর রহমান কার্যালয়ে আসেন। সরকারি কার্যালয়ের চাবি বাইরের লোকের কাছে রাখা ঠিক নয় বলে স্বীকার করেন তিনি। দুপুর ১২টার দিকে ইউএনও ইকবাল আখতার ওই কার্যালয় ছেড়ে আসেন।