বিএনপির বিশৃঙ্খলা দেখে হাসি পায়: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সদস্য সংগ্রহের নামে বিএনপি জেলায় জেলায় যেভাবে বিশৃঙ্খলা করছে, তাতে দলটির নেতা-কর্মীদের গায়ে কাপড় থাকে না, এগুলো দেখে হাসি পায়।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে এক জরুরি সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ না চাইলেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে। বিএনপির রূপকল্প বা ভিশন-২০৩০ মানেই বিভিন্ন জেলায় জেলায় নিজ দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভীষণ মারামারি। সদস্য সংগ্রহের নামে তারা জেলায় জেলায় যেভাবে বিশৃঙ্খলা করছে, তাতে দলটির নেতা-কর্মীদের গায়ে কাপড় থাকে না, এগুলো দেখে হাসি পায়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেগুলো দেখার পর বিএনপি তা নকল করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে।

আগামী আগস্ট মাসে শোক কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে নতুন নতুন ধারা তৈরি হবে। গণতন্ত্রের দিক বিবেচনায় এটা চলুক, সেটা আমরাও চাই। শেষ না দেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের উত্তরার বাসায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় গত রাতে পুলিশ বাধা দেয়। এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছি, আ স ম আবদুর রব ভাই আমার নেতা ছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর বাসায় উল্টাপাল্টা কিছু ঘটে থাকলে অবশ্যই খবর পেতাম। তেমন কিছু ঘটেনি। তারপরও আমি খবর নেব।’

গণমাধ্যমের প্রতি, বিশেষ করে প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। আমাদের ঘরোয়া গণতন্ত্র, তর্ক-বিতর্ক বিষয়ে সঠিক তথ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করুন। তথ্য যাচাই না করে রং চড়ানোর দরকার আছে কি? অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমাদের সমালোচনা আমরা করব। কেউ কেউ সংবাদে এমন বিষয় নিয়ে আসেন, যেগুলো তথ্য নয়। আংশিক সত্যও আসে না।’

এ বিষয়ে দলের মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলে নেওয়ার অনুরোধ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গঠনমূলক সমালোচনা করলে আমরা দল হিসেবে শুদ্ধ হতে পারি। গণমাধ্যমকে আমরা শত্রু মনে করি না।’

সারা দেশে ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় খুব ভালোভাবে সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়নি বলেও অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিতলে খবর আসে না। এটা যদি বিএনপি করত, তবে বড় করেই খবর প্রকাশ হতো বলে তিনি মনে করেন।

বিএনপি-জামায়াত সরকারের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার কারণে এখনো তাঁর নামাজ পড়তে সমস্যা হয়। অনেকে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন। আইভী রহমানসহ ২৩ জন তো জীবনই দিয়েছেন। এরপর সেই সময়ের সরকার মামলার আলামত নষ্ট করে দিয়ে তথাকথিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত, জজ মিয়া নাটক, এফবিআই তদন্ত করতে না দিয়ে সাধু সাজতে চেয়েছিল।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য চট্টগ্রামে, বরিশালের গৌরনদী, নাটোর, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা হয়েছে। কই খালেদা জিয়ার ওপর তো কোনো হামলার কথা শোনা যায়নি।’

গতকাল বৃহস্পতিবার সারা দেশে ৩১টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের হিসাব দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুটি ইউপিতে বন্যার কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। বাকি ২৯টিতে আওয়ামী লীগ ২২টি, স্বতন্ত্র ৪টি এবং বিএনপি ৩টিতে বিজয়ী হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তৃণমূলে আমরা শক্তিশালী, আমরা মুখে বলি না, কাজেও দেখিয়েছি। তৃণমূলে যারা শক্তিশালী, তারাই আগামী নির্বাচন জিতবে।’

সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওসার, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।