চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার বেশি

.
.

জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে সার্বিকভাবে ফুসফুসের ক্যানসার বেশি। তবে নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসার বেশি দেখা গেছে।
ক্যানসার ইনস্টিটিউটের সর্বশেষ ক্যানসার নিবন্ধন প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
ইনস্টিটিউটের ক্যানসার এপিডেমিওলজি বিভাগ এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে চিকিৎসা নিতে আসা ২২ হাজার ২১৫ জন নতুন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬১ শতাংশ (১৩ হাজার ৬২৬) রোগী পুরুষ। বাকি ৩৯ শতাংশ (৮ হাজার ৫৮৯) নারী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী ও পুরুষের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার (১৮ শতাংশ) বেশি। এরপর স্তন (১১ শতাংশ) ও গ্রন্থি (৯ শতাংশ) ক্যানসারের অবস্থান। তবে পুরুষের মধ্যে ফুসফুস (২৫ শতাংশ), গ্রন্থি (১২ শতাংশ) ও খাদ্যনালির (১০) ক্যানসার বেশি দেখা যায়। অন্যদিকে নারীর মধ্যে স্তন (২৯ শতাংশ), জরায়ুমুখ (১৯ শতাংশ) ও ফুসফুসের (৭ শতাংশ) ক্যানসার বেশি।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানের সভাপতি ও ক্যানসার ইনস্টিটিউটের পরিচালক শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, আগে নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার বেশি দেখা যেত। এখন মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হচ্ছে। মানুষ চর্বি ও আমিষ বেশি খাচ্ছে, যার কারণে নারীদের স্তন ক্যানসার বেশি দেখা যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে একাধিক আলোচক বলেন, ক্যানসার ইনস্টিটিউটের এ তথ্য থেকে জাতীয় পর্যায়ে ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। এ জন্য জনগোষ্ঠীভিত্তিক জরিপ হওয়া দরকার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ বলেন, ক্যানসারের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকলে এই খাতে বরাদ্দ দেওয়াও মুশকিল।
ক্যানসার এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ক্যানসার নিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে কর্মশালারও আয়োজন করা হয়েছিল। তবে কাজটি এগোয়নি।
প্রতিবেদন বলছে, ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩ শতাংশ ধূমপায়ী। শিক্ষার মানদণ্ডে দেখা গেছে, নিরক্ষর মানুষের মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব বেশি। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর ৪১ শতাংশই নিরক্ষর। অন্যদিকে পেশাভিত্তিক বিভাজনে দেখা যায়, গৃহিণীরাই ক্যানসারে তুলনামূলকভাবে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ৩৬ শতাংশ গৃহিণী।