মরিচের পাশ দিয়ে হাঁটলেও টাকা!

নিলয় হাসান ১০ টাকার কাঁচা মরিচ চেয়ে একটু লজ্জাই পেলেন। কারণ, দোকানি তাঁকে ক্রেতা হিসেবে পাত্তাই দিলেন না। ধানমন্ডির ওই সবজি বিক্রেতা একরকম তাচ্ছিল্যের সঙ্গেই জানালেন, ২০ টাকার কমে হবে না। দোকান থেকে বের হতে হতে নিলয় বললেন, ‘মরিচের ঘ্রাণ দিয়ে তরকারি রান্না করতে হবে।’
এ সপ্তাহজুড়েই কাঁচা মরিচের দাম বাড়তি। রাজধানীতে আজ শুক্রবার দাম বেড়েছে আরও। স্থানীয় দোকানগুলোয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা বাজারে দাম ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। সুপার শপগুলোতে দাম তুলনামূলকভাবে কম। মীনাবাজারে এক কেজি কাঁচা মরিচ ৭৬ টাকা। বৃষ্টি এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হওয়ায় বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম। নিলয় হাসানের মতো অনেকেই দাম শুনে ভড়কে যাচ্ছেন।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুল জব্বার প্রথম আলোকে বলেন, ‘কালকেও দাম একটু কম আছিল। ১০০ টাকা কেজি বেচছি। কিন্তু সকালে পাল্লা কিনছি ৬০০ টাকায়।’ জব্বার বললেন, এ সপ্তাহের শুরুতে তিনি ৭০ থেকে ৮০ টাকা দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছেন।
তৌফিক এলাহী বাজার করতে এসে শুরুতেই কাঁচা মরিচের দাম জেনে নিলেন। বেশ কয়েক দোকানে তিনি দরদাম করে বলেন, ‘এক দোকান থেকে আরেক দোকানে গেলেই দাম বাড়তি। অবস্থা এমন হইছে যে মরিচের পাশ দিয়ে হাঁটলেও এখন টাকা লাগবে!’
এ বাজারের আরেক দোকানি মো. নোমান কাঁচা মরিচ চাইলেন ১৬০ টাকা কেজি। পাল্লা কিনেছেন ৬২০ টাকায়। তিনি বলেন, সরবরাহ কম। বন্যায় অনেক খেত নষ্ট হয়ে গেছে। কবে নাগাদ দাম কমতে পারে, ধারণা নেই।
বগুড়া মহাস্থান হাট কাঁচা ও পাকা মাল আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই বাজারে কাঁচা মরিচের পাইকারি দাম প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। বগুড়া শহরের ফতেহআলী বাজারে মরিচের খুচরা দাম কেজিতে ৭০-৮০ টাকা। এ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকারি দাম না বাড়লেও গত চার-পাঁচ দিনে খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে। রংপুরে স্থানীয় কৃষকেরা মরিচ বিক্রি করছেন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজিতে। তবে পাইকারি বাজারে তার দাম ৮০ এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
চট্টগ্রাম ও খুলনাতে আবার রাজধানীর মতো অবস্থা। চট্টগ্রামের রেয়াজউদ্দিন ও চকবাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ১৮০ টাকা। খুলনার সোনাডাঙ্গা কেসিসি বাজারে লম্বাকৃতির মরিচের পাল্লা ৫০০ টাকা ও ছোট মরিচ ৬০০ টাকা পাল্লা। ময়লাপোতা কেসিসি সন্ধ্যা বাজারে খুচরা লম্বাকৃতি মরিচের দাম ১২০ ও ছোট মরিচের দাম ১৬০ টাকা।
মেহেরপুরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সপ্তাহে কৃষকেরা ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি করেছেন। সেটা আজ ৫৫-৬০ টাকা হয়েছে। অন্যদিকে ফরিদপুরে গত কয়েক দিনের চেয়ে আজ দাম কিছুটা কম। মধুখালী বাজারে গতকাল ৩ হাজার ৫০০ টাকা ছিল মণ। আজ তা ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।