সড়ক না মেঠোপথ

আশুলিয়ার জিরানী-শিমুলিয়া সড়ক। ছবিটি গত বুধবার তোলা l প্রথম আলো
আশুলিয়ার জিরানী-শিমুলিয়া সড়ক। ছবিটি গত বুধবার তোলা l প্রথম আলো

সড়কের বড় বড় গর্তে জমে আছে কাদাপানি। সড়কে চলতে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ছে যানবাহন। আবার কোথাও সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। এই চিত্র ঢাকার আশুলিয়ার জিরানী-শিমুলিয়া সড়কের।

পথচারী ও গাড়িচালকেরা বলেন, দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ওই সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হলেও ধীরগতির কারণে এর সুফল পাচ্ছেন না তাঁরা।

সাভার উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেকেন্ড রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় জিরানী-শিমুলিয়া সোয়া আট কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়েছে গত বছরের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৪ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। চুক্তি অনুযায়ী আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের ৩০ ভাগ কাজও শেষ হয়নি।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবদুল করিম বলেন, সড়কটির জিরানী অংশে দুই পাশে দোকানপাট থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারে না। পানির ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, রক্ষণাবেক্ষণকাজের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যেই সড়কটির টেঙ্গুড়িয়া থেকে পশ্চিম কলাবাগান পর্যন্ত এক হাজার মিটার পর্যন্ত আরসিসি ঢালাই দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশের কোথাও কার্পেটিং আবার কোথাও ঢালাই দেওয়া হবে।

গত বুধবার দেখা যায়, জিরানী থেকে টেঙ্গুড়িয়া পূর্বপাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে দেড় থেকে দুই ফুট পর্যন্ত পানি জমে আছে। এর মধ্যেই মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, লেগুনা, বাস ও পিকআপ চলাচল করছে। কিছুক্ষণ পরপরই এসব যানবাহনের কোনোটা গর্তে আটকে পড়ছে। এর ফলে কখনো কখনো যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। সড়কের দুই পাশ ঘেঁষে কাদাপানি মাড়িয়ে চলাচল করতে দেখা যায় পথচারীদের।

নিজের সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে জিরানী যাওয়ার পথে টেঙ্গুড়িয়া এলাকায় যানজটে আটকা পড়েন মো. মোমিন। তিনি বলেন, ‘আধা ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে যানজটে আটকে আছি। সামনের একটি গাড়ির চাকাও ঘুরছে না। প্রায় প্রতিদিনই এই যানজটের কবলে পড়ে ছেলেকে নির্দিষ্ট সময়ে স্কুলে পৌঁছানো সম্ভব হয় না।’

জিরানী-শিমুলিয়া সড়কে সাত বছরের বেশি সময় ধরে লেগুনা চালান আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, গর্ত ও পানির মধ্যে দিয়ে চালাতে গিয়ে তাঁর গাড়ি প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। মাঝেমধ্যে উল্টে গিয়ে গাড়ির ক্ষতি হয়। মেরামত ছাড়া গাড়ি রাস্তায় নামানোই সম্ভব হয় না। এভাবে গত এক মাসে গাড়ি মেরামত বাবদ তাঁর খরচ হয়েছে অন্তত ২২ হাজার টাকা।

জিরানী এলাকার চা-দোকানি নূরু মিয়া বলেন, ভাঙা সড়ক, কাদাপানি আর যানজট—এই তিনে মিলে তাঁদের বেহাল। এসব কারণে ব্যবসায়ও ধস নেমেছে।

সাভার উপজেলা প্রকৌশলী ধীরেন্দ্র দেবনাথ বলেন, সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। আরও বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পত্র দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়ার পর বড় ধরনের উন্নয়নকাজ করা হবে।