বিএনপির সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠান পণ্ড

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বিএনপির সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার দুপুরে স্থানীয় পলিগ্যান পাবলিক স্কুলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।

দলীয় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জালাল উদ্দিন ও তাঁর সমর্থকেরা এর আয়োজন করেছিলেন। অপরদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ইদ্রিস আলী ভূঁইয়ার সমর্থকেরা পাল্টা কর্মসূচি দেওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এতে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায়। ১৪৪ জারি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপি।

গতকাল দুপুরে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও চরফরাদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিনের পৌর সদরের বাসায় সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির নতুন সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম উপলক্ষে গতকাল দুপুরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠান ঘিরে উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা চলছিল। তিনি অভিযোগ করেন, ‘একটি কুচক্রী মহল স্থানীয় প্রশাসনকে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়েছে। আমরা উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি। তবে আমরা উপজেলার সব ইউনিয়নে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’

সংবাদ সম্মেলনে সদস্যসচিব চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, এই অনুষ্ঠানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম প্রধান অতিথি, উদ্বোধক হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম এবং জেলা বিএনপির সহসভাপতি ঈসমাইল হোসেন উপস্থিত থাকার কথা ছিল। ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালামের উপস্থিতির কথা জানতে পেরেই একটি মহল প্রশাসনকে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়েছে। পাকুন্দিয়ায় এদের কোনো সাংগঠনিক ভিত্তি নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান নিষ্ক্রিয় আহ্বায়ক কমিটি কারও সঙ্গে কথা না বলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির অন্য নেতা-কর্মীরা মানতে পারেননি। সে জন্য তাঁরা আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে গত রোববার সন্ধ্যায় মিছিল করে গতকাল পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা দেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

তবে আহ্বায়ক মো. জালাল উদ্দিন উত্তেজনার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল প্রশাসনকে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়ে অনুষ্ঠান পণ্ড করে দেয়।

এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন, মো. ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া ও মো. জালাল উদ্দিনের দুটি গ্রুপ একই জায়গায়, একই সময় সভা আহ্বান করায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, উপজেলা বিএনপির বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পলিগ্যান পাবলিক স্কুলের আশপাশসহ পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।