৫৭ ধারায় মামলা নেওয়ায় ওসি প্রত্যাহার

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারায় মামলা নেওয়া ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাসকে খুলনা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে পুলিশ।

আজ বুধবার রাতে থানা থেকে ওসিকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ৫৭ ধারায় মামলা নেওয়া ও গভীর রাতে বাড়ি ঘেরাও করে সাংবাদিক আবদুল লতিফ মোড়লকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা জেলা পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা।

নিজামুল হক মোল্লা মোবাইলে প্রথম আলোকে বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা খুবই স্পর্শকাতর। এ ধরনের মামলা রেকর্ড করতে হলে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া মেনেই করতে হবে। কিন্তু সাংবাদিক আবদুল লতিফ মোড়লের ক্ষেত্রে যথাযথ ধারায় তা করা হয়নি। দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেওয়া হয়েছে। যে কারণে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুকুমার বিশ্বাসকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

একই সঙ্গে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মো. সজীব খানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ফেসবুকে মরা ছাগলের খবর ‘শেয়ার’ করার অপরাধে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা হয় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আবদুল লতিফ মোড়লের বিরুদ্ধে। লতিফ খুলনার স্থানীয় দৈনিক প্রবাহের ডুমুরিয়া প্রতিনিধি। সোমবার রাত ৯টার দিকে ডুমুরিয়া থানায় ৫৭ ধারায় মামলা হওয়ার পর রাত আড়াইটার দিকে তাঁকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত লতিফকে কারাগারে পাঠান। বুধবার তিনি অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তি পান। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খুলনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর বিচারক নুসরাত জাবিন ১০ হাজার টাকার বন্ড নিয়ে তাঁকে জামিন দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, গত ২৯ জুলাই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ তাঁর নিজ এলাকা ডুমুরিয়ায় কয়েকজন দুস্থ মানুষের মাঝে হাঁস, মুরগি ও ছাগল বিতরণ করেন। জুলফিকার আলী নামের এক ব্যক্তির পাওয়া ছাগল এদিন রাতে মারা যায় বলে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এই খবর ফেসবুকে শেয়ার করার অভিযোগে লতিফের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করেন সুব্রত।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রতিমন্ত্রীর বিতরণ করা ছাগল মারা যাওয়াসংক্রান্ত সংবাদ ফেসবুকে শেয়ার করেছেন লতিফ। এতে প্রতিমন্ত্রীর সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। খবরটিতে ছাগল বিতরণ বা মৃত ছাগলের কোনো ছবি নেই। খবরে প্রতিমন্ত্রীর একটি পাসপোর্ট আকারের ছবি যুক্ত করা হয়েছে। এটা দেখে তাঁর (সুব্রত) মনে হয়েছে, প্রতিমন্ত্রীকে হেয়প্রতিপন্ন করতেই খবরটি ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে।