রাজউকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ, সভা স্থগিত

নতুন বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জে এক মতবিনিময় সভায় এসে জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের তোপের মুখে পড়েন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তারা। এ ছাড়া রাজউকের চেয়ারম্যান না আসায় জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের দাবির মুখে সভা স্থগিত করা হয়।
২ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ এফ এম এহতেশামুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ৮ আগস্ট সাড়ে ১০টায় নগর ভবনের সভাকক্ষে সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সভাপতিত্বে ড্যাপের ওপর মতবিনিময় সভা হবে। মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে রাজউকের চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান উপস্থিত থাকবেন।
সে অনুযায়ী গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগর ভবনে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হন। মতবিনিময় সভায় অতিথি হিসেবে রাজউকের চেয়ারম্যানের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও তাঁর পক্ষে আসেন রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম ও ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম। এ নিয়ে কাউন্সিলর ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে মতবিনিময় সভা স্থগিত করার দাবি জানান। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মতবিনিময় সভার সভাপতি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী সভা স্থগিত ঘোষণা করেন।
সভা স্থগিত করার আগে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রাজউক চেয়ারম্যান আসার কথা, কিন্তু তিনি আসেননি। এটা আমরা ভালো চোখে দেখছি না। আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। রাজউক চেয়ারম্যান এলেই আলোচনা হবে, না হলে হবে না।’ তিনি বলেন, ‘রাজউক উন্নয়নের জন্য জমি নিয়েছে। উন্নয়ন করবেন না, জমি ফেরত দেবেন, এটাই তো সহজ কথা। আপনারা জমি বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাবেন, অথচ নারায়ণগঞ্জবাসী উন্নয়ন পাবে না, তা তো হবে না। এটা চলতে পারে না, এটা চলতে দেওয়া যাবে না।’
কাউন্সিলর শফিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘রাজউক নারায়ণগঞ্জ থেকে নকশা অনুমোদন নিয়ে গেল। রাজউক নকশা অনুমোদন দিলে সুবিধা, সিটি করপোরেশন অনুমোদন দিলে কী অসুবিধা? আপনারা নকশা অনুমোদন দেন, ছয়তলা ভবন ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। রাস্তাঘাট সবকিছু ঠিক থাকার পরও আপনারা কেন ঘুষ নেন?’
মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করেছিল রাজউক। আমরা আমাদের অব্যবহৃত জায়গাগুলো ফেরত চেয়েছি। আমাদের যে পাঁচটি মার্কেট ছিল সেগুলো ফেরত চেয়েছিলাম। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের আইনি লড়াই চলছে। এখনো আমরা আইনি লড়াইয়ে আছি। কিন্তু মামলা চলমান অবস্থায় রাজউক সেই জমি প্লট করে বিক্রির জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে।’
রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আপনারা আলোচনায় যেসব বিষয় তুলে ধরেছেন, আমরা তা চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে তুলে ধরব।’
পরে কাউন্সিলর ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের দাবির মুখে মতবিনিময় সভা স্থগিত ঘোষণা করেন সভার সভাপতি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।