প্রতিশোধ নিতে সৎভাইকে হত্যা?

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় নিখোঁজের এক দিন পর সাইফুল মিয়া (১৩) নামের এক কিশোরের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বাহেরচর (বাড়াইলচর) গ্রামের ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার তিনজনকে আসামি করে নিহত শিশুর বাবা ছালেক মিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সাইফুল মিয়ার সৎভাই সজীব মিয়া (২০) ও তাঁর বন্ধু জামিল হোসেনকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও নিহত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার বাহেরচর গ্রামের সাইফুল মিয়াকে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান তার সৎভাই সজীব মিয়া। গ্রামের পাশে পাটখেতে নিয়ে তাঁরা কাঁচা পাটের আঁশ দিয়ে সাইফুলের হাত-পা বেঁধে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে। পরে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে সাইফুলকে হত্যা করা হয়। লাশ গুম করতে প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে পাটখেতের পাশে ডোবায় কচুরিপানার নিচে ফেলে দেওয়া হয়।

নিহত সাইফুল মিয়ার বাবা ছালেক মিয়া বলেন, বুধবার রাত নয়টার পর থেকে সাইফুলকে পাওয়া যাচ্ছিল না। জামিল হোসেনকে সন্দেহ হলে তাঁকে ধরে জিজ্ঞাসা করলে জামিল জানায় সজীব মিয়া সব জানে। পরে সজীব সব স্বীকার করে।

বাঞ্ছারামপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাব্বির রহমান বলেন, সাইফুলকে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন গ্রেপ্তার হওয়া সজীব মিয়া ও জামিল হোসেন। তাঁদের স্বীকারোক্তিতেই সাইফুলের বস্তাবন্দী লাশ ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সজীব মিয়া, মাজিল হোসেন ও জুনাইদ মিয়াকে আসামি করে সাইফুলের বাবা ছালেক মিয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

সাব্বির রহমান আরও বলেন, সজীব মিয়া ও সাইফুল মিয়ার মা একজন এবং তাঁদের বাবা দুজন। সজীব জানিয়েছেন, তাঁর বাবা একই গ্রামের গোলাম মোস্তফাকে তাঁর সৎবাবা ও মা মিলে হত্যা করেছিল ১৫ বছর আগে। সেই ধারণা থেকে প্রতিশোধ নিতে সৎভাইকে হত্যা করা হয়েছে।