আটক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ডিবির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ছেড়ে দিল কোস্টগার্ড!

তালিকাভুক্ত এক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটকের পর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছ থেকে তাঁকে ছিনিয়ে নিয়ে কোস্টগার্ড ছেড়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার বেলা তিনটার দিকে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরের কাছে এ ঘটনা ঘটে। যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখান থেকে কোস্টগার্ড টেকনাফ জোনের কার্যালয় ২০ গজ দূরে।

ইয়াবা ব্যবসায়ীকে ছিনিয়ে নিয়ে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনায় রোববার রাত ১১টায় টেকনাফ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ডিবির উপপরিদর্শক মো. আলমগীর হোসেন।

 ডিবি জানায়, ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীর নাম ফিরোজ আহমদ। তাঁর বাড়ি টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন পল্লানপাড়ায়। তাঁর বিরুদ্ধে ইয়াবা চোরাচালান ও অস্ত্রসহ তিন মামলা রয়েছে।

জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রোববার বিকেলে টেকনাফ স্থলবন্দর এলাকা থেকে কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ফিরোজ আহমদকে আটক করে। তাঁর কাছে ইয়াবার মজুত রয়েছে বলে ডিবির কাছে গোপন তথ্য ছিল। ফিরোজ টেকনাফ থানা–পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ৫০ ইয়াবা ব্যবসায়ীর একজন। আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে কক্সবাজারের ডিবি কার্যালয়ে নিতে গাড়িতে তোলার সময় কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশন কমান্ডার জাফর ইমাম বাধা দেন এবং আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। এ সময় সেখানে সশস্ত্র অবস্থায় কোস্টগার্ডের অন্য সদস্যরাও ছিলেন।

অভিযোগের বিষয়ে কোস্টগার্ড টেকনাফের স্টেশন কমান্ডার জাফর ইমাম গতকাল সোমবার রাত নয়টায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জিডির বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু ওই ঘটনায় অস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনা সত্য নয়। কোস্টগার্ড কার্যালয়ের সামনে একজন লোককে (ফিরোজ) টানাটানি করে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে ডিবির লোকজন। লোকটির চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে আটকের ব্যাপারে জানতে চাইলে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি তাঁরা। একপর্যায়ে তাঁকে ছেড়ে দেয় তাঁরা।’

ঘটনার বিষয়ে ফিরোজ আহমদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি টেকনাফ স্থলবন্দর বোট মালিক সমিতির সভাপতি। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা থাকলেও সব কটিতে তিনি জামিনে রয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ডিবির এক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে আসছিলেন। টাকা না দেওয়ায় তাঁকে তুলে নিতে চেয়েছিল ডিবি।

এ বিষয়ে কক্সবাজার ডিবির উপপরিদর্শক ফারুক ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগটি সত্য নয়। ফিরোজের কাছে ইয়াবার মজুত রয়েছে—এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়।

এদিকে কোস্টগার্ডের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে আটকের ঘটনার জের ধরে দুটি বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে যা ঘটেছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।