হাসপাতাল থেকে ডেকে নিয়ে দোকান কর্মচারীকে নির্যাতন

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে চুরির অভিযোগে দোকানের কর্মচারীকে হাসপাতাল থেকে ডেকে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পরে দোকানমালিকের লোকজন তাঁকে ছেড়ে দেন। বর্তমানে ওই যুবক কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত মন্টু মিয়া উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি কালীগঞ্জ শহরের থানাপাড়া এলাকার খাঁন ট্রেডার্সে ১৫-১৬ বছর কর্মচারী হিসেবে কাজ করছেন। তাঁর বাবাও ওই দোকানে কাজ করেন। দোকানটির মালিক ছাবরুস সোবাহান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মিন্টু মিয়া গতকাল রোববার বলেন, দোকানটি ছাবরুস সোবাহানের বাড়িসংলগ্ন। নানা প্রয়োজনে দোকানের কর্মচারীরা বাড়ির ভেতর যান। গত সপ্তাহে ছাবরুস সোবাহানের ঘর থেকে কিছু স্বর্ণালংকার চুরি হয়। চুরির দায় তাঁর ওপর দেওয়ার চেষ্টা করে মালিকপক্ষ। চুরির অপবাদ দিয়ে বিভিন্নভাবে তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। লজ্জায় তিনি গত বুধবার আত্মহত্যার জন্য কীটনাশক পান করেন।

মিন্টু মিয়ার স্ত্রী জেসমিন আরা বলেন, গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে (মন্টু) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছিল। শনিবার বেলা ১১টার দিকে দোকানের মালিকপক্ষের লোকজন কথা বলার অজুহাতে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ডেকে নিয়ে যান। তাঁরাই রোগীর ছাড়পত্র নেন। তাঁর স্বামীকে দোকানমালিকের বাড়িতে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালান তাঁরা। নির্যাতনকারী ব্যক্তিরা মৃতপ্রায় অবস্থায় তাঁকে বেলা তিনটার দিকে আবারও হাসপাতালে দিয়ে যান।

মিন্টু মিয়া বলেন, তাঁকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। তাঁর দুই হাতের নখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা মারপিট করেছেন আর বলেছেন, চুরির কথা স্বীকার না করা পর্যন্ত ছাড়বেন না। তিনি বাধ্য হয়ে চুরির কথা স্বীকার করেছেন। স্বীকারোক্তি নেওয়ার পর তাঁরা তাঁকে হাসপাতালে দিয়ে যান।

এ বিষয়ে দোকানমালিকের ছোট ভাই আবু নাসের ওরফে স্বপন বলেন, তাঁদের বাড়ি থেকে ছয় ভরি স্বর্ণের গয়না চুরি হয়েছে। এর সঙ্গে মিন্টু জড়িত। তাঁকে মারপিট করার পর চুরির কথা স্বীকারও করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে দোকানে কাজ করায় তাঁকে পুলিশে দেওয়া হয়নি।

হাসপাতালের চিকিৎসক আব্দুস সাত্তার বলেন, মিন্টুকে শনিবার বেলা ১১টার দিকে রিলিজ দেওয়া হয়েছিল। বেলা তিনটায় জখম অবস্থায় আবারও ভর্তি হয়েছেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, দোকানের মালিকপক্ষ ছেলেটিকে (মন্টু) পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও দিতে যাচ্ছিল। তিনি ছেলেটিকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মারপিটের বিষয়ে তিনি বলেন, এভাবে কাউকে তাঁরা মারধর করতে পারেন না। বিষয়টি সেভাবে দেখা হচ্ছে।