মেঘনায় জলদস্যুদের হামলায় ৩৩ জেলে আহত, নিখোঁজ ৩

নোয়াখালীর হাতিয়ার ঠেঙ্গারচরের কাছে মেঘনা নদীতে জেলেদের ওপর হামলা চালিয়ে ৩৩ জন জেলেসহ দুইটি মাছ ধরা ট্রলার লুট করে নিয়ে গেছে জলসদ্যুরা। গত শনিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে গতকাল রোববার সকালে অপহৃত জেলেদের চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে ছেড়ে দেওয়া হয়। অপহৃত জেলেদের সবাই হামলায় আহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামলার শিকার আরও তিন জেলে নদীতে পড়ে যান। গতকাল বিকেল পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।

আহত জেলেদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন মো. হোরন মাঝি, নেজাম উদ্দিন, মনির আহমেদ, আবুল কালাম, অলি উদ্দিন ও মো. দুলাল। তাঁরা সবাই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ট্রলারের মালিক আলাউদ্দিন মাঝি। তাঁদের গতকাল রোববার দুপুরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আলাউদ্দিন মাঝি প্রথম আলোকে বলেন, নদীতে ইলিশ ধরার মৌসুম শুরু হওয়ার আগে থেকে সুবর্ণচরের মোহাম্মদপুরের কালাম মাঝির নেতৃত্বে একটি জলদস্যু দল তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গত শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কালাম মাঝির নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন জলদস্যু ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঠেঙ্গারচরে মাছ ধরার সময় তাঁর জেলেদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ৩৬ জেলের মধ্যে মো. হানিফ, মো. খলিল ও মো. ইউছুফ আহত অবস্থায় নদীতে পড়ে যান। বাকি ৩৩ জেলেকে জলদস্যুরা দুটি ট্রলারসহ অপহরণ করে সন্দ্বীপে তাদের আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে রোববার সকালে অপহৃত জেলেদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

 আলাউদ্দিন মাঝি আরও বলেন, অপহৃত সবাই হামলায় আহত হয়েছেন। নদীতে পড়ে যাওয়া তিন জেলেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি।

হামলার শিকার কয়েকজন জেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, কালাম মাঝি সন্দ্বীপের এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রচ্ছায়ায় থেকে মেঘনার ঠেঙ্গারচর ও আশপাশের এলাকায় মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করেন। কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে জেলেদের ওপর হামলা চালিয়ে ট্রলার লুট করা হয়।

ট্রলার ডাকাতি করে জেলেদের অপহরণের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া কোস্টগার্ডের স্টেশন কমান্ডার লে. হাসানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তাঁদের কেউ জানায়নি। ঠেঙ্গারচরের দিকে কোস্টগার্ডের একটি বোট টহলে গেছে। তাঁদের তিনি বিষয়টি দেখতে বলবেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ বলেন, ঘটনাটি কেউ তাঁকে জানায়নি।