ভুয়া লাইসেন্স ও চোরাপথে কেনা অস্ত্র নিয়ে নিরাপত্তার কাজ

ভুয়া লাইসেন্স ও চোরাপথে কেনা অস্ত্র নিয়ে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত এই চারজনকে আটক করে র‍্যাব। ছবি: সংগৃহীত
ভুয়া লাইসেন্স ও চোরাপথে কেনা অস্ত্র নিয়ে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত এই চারজনকে আটক করে র‍্যাব। ছবি: সংগৃহীত

স্বাক্ষর জাল করে রংপুরের জেলা প্রশাসনের অফিস সহকারী শামসুল ইসলাম যাঁদের ভুয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছিলেন, তাঁরা কালোবাজারে অবৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

আজ সোমবার রাজধানীর গুলশান বারিধারার একটি নামকরা আবাসিক হোটেলের নিরাপত্তায় নিযুক্ত চারজনকে আটকের পর এ তথ্য জানায় র‍্যাব।

আটক চারজন হলেন সেলিম রেজা (৩৭), রবীন্দ্র নাথ মণ্ডল (৪২), রাজু মিয়া (৩৬) ও শরীফুল ইসলাম (৩০)। তাঁদের কাছ থেকে চারটি শটগান ও ৪০টি কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে। ওই চারজন রংপুর জেলা প্রশাসনের অফিস সহকারী শামসুলের কাছ থেকে ভুয়া লাইসেন্স সংগ্রহ করে চোরাবাজার থেকে অস্ত্র কিনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর জাল করে লাইসেন্স দেওয়ার ঘটনায় গত ১৮ মে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলায় গত ৫ জুলাই ঢাকা থেকে শামসুলকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। মামলাটি তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শামসুল স্বাক্ষর জাল করে মোট ৩০২টি অস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছিলেন। ঠিকানা ধরে ওই লাইসেন্সধারীদের সবাইকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত ওই লাইসেন্সধারীদের মধ্য থেকে মোট ৮৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৯১৩টি কার্তুজ জমা পড়েছে।

এদিকে র‍্যাব-১-এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, আটক চারজন ওই আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজগুলো নিজেরা কেনেননি। এমনকি লাইসেন্স সংগ্রহ করার জন্য তাঁরা কখনো রংপুরেও যাননি। মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে একজন দালালের মাধ্যমে তাঁরা ঢাকায় বসেই ওই অস্ত্র ও লাইসেন্স সংগ্রহ করেন।

র‍্যাবের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আটক চারজন রংপুরের সিয়াম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি দোকান থেকে অস্ত্র কিনেছেন বলে কাগজ দেখিয়েছেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রংপুরে এ রকম কোনো অস্ত্রের দোকানই নেই। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও আরও কিছু তথ্য মিলিয়ে মনে হয়েছে, ভারত বা আশপাশের কোনো দেশ থেকে চোরাপথে এসব অস্ত্র কিনে তাঁদের কাছে বিক্রি করে ভুয়া দোকানের রশিদ দাখিল করে অস্ত্রের নম্বর লাইসেন্সে ওঠানো হয়েছে।

র‍্যাব জানায়, অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার কিছু শর্ত আছে। সেগুলো যাচাইয়ের পরে লাইসেন্স ইস্যু হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সেটি নিয়ে অস্ত্রের দোকানে দেখানোর পরে অস্ত্র ব্যবসায়ী লাইসেন্সটি যাচাই করে দেখে তাঁর কাছে অস্ত্র বেচবেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে লাইসেন্স যে রকম ভুয়া, দোকানও সে রকম ভুয়া।