তারেকের মামলার বিচারক দেশ ছেড়ে মালয়েশিয়ায়

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নিষেধাজ্ঞার আগেই দেশ ছেড়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক মোতাহার হোসেন। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ায় রয়েছেন বলে দুদক জানিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে বিচারকের ঘনিষ্ঠ দুই স্টেনোগ্রাফারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ তথ্য জানা গেছে। তাঁরা হলেন, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এর স্টেনোগ্রাফার আবুল হাসান ও বিশেষ জজ আদালত-৩-এর স্টেনোগ্রাফার মো. নুরুল ইসলাম। প্রায় তিন ঘণ্টা তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর-রশীদ।

জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হারুন-অর-রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোতাহার হোসেন দেশ ছেড়েছেন। পরিবারের বিষয়েও কেউ কিছু বলতে পারে না।’ তবে কমিশনারদের মাধ্যমে যথোপযুক্ত আইনি পদ্ধতিতে বিদেশ থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানান তিনি। 

২০ জানুয়ারি বিচারক মোতাহার হোসেনের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি এবং সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। অবৈধভাবে বিদেশে অর্থ পাচারসংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেন বিচারক মোতাহার হোসেন। তিনি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি অবসরে যান। তাঁর অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে ব্যক্তিগত গাড়িচালক সোহরাব হোসেন ও দেহরক্ষী (গানম্যান) বাদল দেওয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২৭ জানুয়ারি উপস্থিত থাকতে চিঠি দিয়েছে দুদক। দুদকের কাছে মোতাহার হোসেনের বিরুদ্ধে বিদেশে অবৈধ উপায়ে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। ছেলে লন্ডনে থেকে পড়াশোনা করেন। বিচারক লন্ডনে বাড়ি কিনেছেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতেও তিনি সম্প্রতি দুটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেছেন। এ ছাড়া তাঁর গ্রামের বাড়ি নাটোরে নামে বেনামে প্রায় ৫০ বিঘা কৃষি-অকৃষি জমি কিনেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

২০১০ সালের ৬ জুলাই বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় দুদক। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রায়ে তারেককে বেকসুর খালাস ও মামুনকে অর্থদণ্ডসহ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইব্রাহীম ২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মানি লন্ডারিং আইনে ওই মামলাটি করেন (নং-৮)। তাতে অভিযোগ করা হয়, তারেক রহমান ও মামুন ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পথে মোট ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে সিঙ্গাপুরে পাচার করেছেন।