আন্দোলন ও হয়রানিতে নতুন কমিটি হচ্ছে না

দিনাজপুর জেলা যুবদলের ৩১ সদস্যের দুই বছর মেয়াদি আহ্বায়ক কমিটি ঠিক কবে হয়েছে, তা সঠিক করে বলতে পারছেন না জেলার নেতৃস্থানীয় কোনো নেতা। কেউ বলছেন ২০১০ সালে, কেউ বলছেন ২০১২ সালে। আবার কোনো কোনো নেতা বলছেন, আন্দোলন ও হয়রানির কারণে নতুন কমিটি হচ্ছে না।

যুবদলের তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগের কমিটি ২ বছরের জায়গায় ছিল প্রায় ১০ বছর। বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিও অনেক সময় পার করছে। আহ্বায়ক কমিটিতে নিষেধাজ্ঞা থাকায় দীর্ঘদিন থেকে জেলার বিভিন্ন পৌর ও উপজেলা কমিটিও গঠিত হয়নি। সব মিলিয়ে তৃণমূলে রয়েছে নানা আলোচনা।

জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও দিনাজপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এ কে এম মাসুদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আহ্বায়ক কমিটি সম্ভবত ২০১২ সালে গঠিত হয়। ২০১৩ সাল থেকে তো আন্দোলন শুরু হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় সরকারের হয়রানি। প্রত্যেক নেতা-কর্মীর নামে মামলার পাহাড় গড়তে শুরু করে। যার কারণে নতুন করে সম্মেলন করা আর হয়নি।

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোন্নাফ মুকুল বলেন, কেন্দ্রের সম্মেলনই সম্পন্ন হয়নি। যার কারণে জেলা সম্মেলন করা যাচ্ছে না। অনুজদের সুযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। অনেক যোগ্য নেতা-কর্মীকে মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। দলীয় সমস্যার পাশাপাশি সরকারের হয়রানি-নির্যাতনে উপজেলা ও পৌরসভার কমিটি গঠন করা যাচ্ছে না।

বীরগঞ্জ পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রত্যেক নেতা-কর্মীর পদ-পদবি নিয়ে প্রত্যাশা থাকে। দীর্ঘদিন থেকে কমিটি না হওয়ায় দল চাঙা হচ্ছে না। তবে এ অবস্থায়ও আন্দোলন বা নির্বাচনে কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিরল যুবদলের সভাপতি রেজাউল ইসলাম বলেন, বহু আগেই তাঁদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে কত দিন আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে, তা ঠিক তাঁর মনে নেই। জেলার গ্রুপিং-লবিংয়ের কারণেই বহুদিন থেকে সম্মেলন ও কমিটি গঠিত হয়নি। দিনাজপুর বিএনপির ঘাঁটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অঙ্গসংগঠনগুলো বিএনপির চালিকাশক্তি। এসব অঙ্গসংগঠনের কমিটি না করায় বিএনপিকে আগামী নির্বাচনের সময় চরম মূল্য দিতে হবে।

জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলায় জর্জরিত যুবদল। দিনাজপুরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মামলা যুবদলের নেতা-কর্মীদের নামে। তাঁর নিজের নামে ৩২টি মামলা রয়েছে। জেলা যুবদলের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে কারাগারে থাকতে হয়েছে। তাঁকে মামলা ও ক্রসফায়ারের ভয়ে চার বছর নিজ বাড়ি থেকে পালিয়ে থাকতে হয়েছে।

সম্মেলন ও কমিটির বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাজনীতিতে যেহেতু নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকে, তাই দলকে চাঙা করতে হলে সম্মেলনের বিকল্প নেই। তবে বিএনপির সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত যুবদলের সম্মেলন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ অঙ্গসংগঠনের সম্মেলন করলে যদি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, তার প্রভাব মূল দলে পড়বে।