২৪ ঘণ্টায় বিদ্যুৎ মিলছে ৫ ঘণ্টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় কয়েকটি ইউনিয়নে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ঈদের আগের দিন শুক্রবার থেকে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। এতে এসব ইউনিয়নের দুই লাখ বাসিন্দা নানাভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় ও ভুক্তভোগী গ্রাহকদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১২৪টি গ্রামে বিদ্যুতের বাণিজ্যিক, আবাসিক মিলিয়ে প্রায় ৫২ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। এসব গ্রাহকের জন্য ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। তবে সর্বোচ্চ ১২ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে। বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে উপজেলা সদরে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। এখানে ১৫ থেকে ১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। তবে উপজেলার তেজখালী, পাহাড়িয়াকান্দি, দরিয়াদৌলত, সোনারামপুর, আইয়ুবপুর, ফরদাবাদ, দরিকান্দি, রূপসদী, ছলিমাবাদ, মানিকপুর ও ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়নে ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে।

 পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাঞ্ছারামপুর কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ইয়াহিয়া আকন্দ বলেন, ‘উপজেলা সদরের জগন্নাথপুর এলাকার একটি ট্রান্সফরমার ঈদের আগের দিন হঠাৎ বিকল হওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠেছি আমরা।’ তিনি দাবি করেন, উপজেলায় দিনের বেলায় বিদ্যুতের কোনো সমস্যা নেই। তবে নতুন ট্রান্সফরমার বদল হওয়ায় সমন্বয় করতে অসুবিধা হচ্ছে, সে জন্য কোথাও কোথাও লোডশেডিং কিছুটা বেশি হচ্ছে।

ডিজিএমের দাবি নাকচ করে দিয়ে মরিচাকান্দি এলাকার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘রাত আর দিন মিলে চার-পাঁচ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে আমাদের এলাকায়। এক-দেড় মাস ধইরা বিদ্যুতের এমন খারাপ অবস্থা চলছে।’

ঈমামনগর গ্রামের জিন্নত আক্তার বলেন, ‘আমাদের এলাকায় দিনের বেলায় এক-দুই ঘণ্টা এবং রাত ১২টার পরে এক-দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের এমন বাজে অবস্থা চলছে। আমরা প্রতিদিনই অভিযোগ জানাই বিদ্যুৎ নাই বলে, কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনে না। ঈদের গোশত ফ্রিজে রাখার পর পইচা গেছে। সামনে বাচ্চাদের পরীক্ষা আসছে। বিদ্যুতের খারাপ অবস্থার কারণে তারা ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছে না। বিদ্যুতের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, আমরা হারিকেনের যুগে ফিরে যাচ্ছি।’

মরিচাকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঈদের চার-পাঁচ দিন আগেই ডিজিএম সাহেব বলেছেন, বিদ্যুৎ অফিসে সমস্যা আছে, বিদ্যুতের অবস্থা এর চেয়ে ভালো হবে না। আমরা ২৪ ঘণ্টায় মাত্র দুই-তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাই। এক সপ্তাহ ধরে এমন অবস্থা চলছে।’

তেজখালী ইউপির চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম  বলেন, ‘সারা দিন আর রাত মিলে চার-পাঁচ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুতের খুব বাজে অবস্থা। এ বিষয়ে ডিজিএমকে ফোনে বিদ্যুতের অসুবিধার কথা জানাতে জানাতে আমরা বিরক্ত হয়ে পড়েছি।’