ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটনশিল্প

পর্যটকেরা আসতে শুরু করায় কাপ্তাই হ্রদের বুকে আবারও শুরু হয়েছে নৌবিহার। ছবিটি রাঙামাটি সদরের বালুখালী এলাকা থেকে গত রোববার বিকেলে তোলা l সুপ্রিয় চাকমা
পর্যটকেরা আসতে শুরু করায় কাপ্তাই হ্রদের বুকে আবারও শুরু হয়েছে নৌবিহার। ছবিটি রাঙামাটি সদরের বালুখালী এলাকা থেকে গত রোববার বিকেলে তোলা l সুপ্রিয় চাকমা

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল শুরু হওয়ায় রাঙামাটিতে পর্যটন ব্যবসা ধীরে ধীরে মন্দা কাটিয়ে উঠছে। এবার কোরবানির ঈদের পরদিন থেকে বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা। ঈদের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে ৫৬টি হোটেল-মোটেলের অধিকাংশ কক্ষই ভাড়া হয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলোও ছিল সরগরম।

গত ১৩ জুনের পাহাড়ধসের পর দীর্ঘ আড়াই মাস চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে ভারী যানবাহন চলেনি। জেলার পর্যটনশিল্পেও এর প্রভাব পড়ে। প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে যায় পর্যটকের সংখ্যা। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে পর্যটন খাতে দৈনিক ৩০ লাখ টাকা ক্ষতি গুনতে হয়েছে। গত ২১ আগস্ট থেকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করছে। এরপর থেকেই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পর্যটক। ঈদের পর গত দুই দিনে রাঙামাটিতে কয়েক হাজার পর্যটক এসেছে বলে বেসরকারি হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে।

তবে রাঙামাটি হ্রদের পানি বাড়ায় পর্যটন কমপ্লেক্সের ঝুলন্ত সেতু এখনো পানির নিচে তলিয়ে আছে। এ কারণে পর্যটন করপোরেশনের মালিকানাধীন রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সে পর্যটকদের আনাগোনা কমেছে। এই কেন্দ্রের তেমন কক্ষও ভাড়া হয়নি।

গত সোমবার সকাল থেকে কাপ্তাই হ্রদ, রাজবনবিহার, শুভলং ঝরনা ও কাপ্তাই-আসামবস্তি-রাঙামাটি সড়কের বড় গাঙ রেস্তোরাঁয় শত শত পর্যটক দেখা গেছে। এ ছাড়া কাপ্তাই হ্রদের বুকে অবস্থিত পর্যটনকেন্দ্র চাং পাং, মেজাং ও গর্বাও পর্যটকে পরিপূর্ণ ছিল।

চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক মো. আয়ুব আলী ও মো. শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ১৩ জন বন্ধু মিলে রাঙামাটিতে বেড়াতে এসেছি। রাজবনবিহার ও শুভলং ঝরনায় ঘুরে খুব ভালো লাগল।’

বেসরকারি হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির আহ্বায়ক মো. ইমতিয়াজ সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করায় পর্যটকেরা এখন নির্ভয়ে রাঙামাটি আসছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় পর্যটকের সংখ্যা কম হলেও ঈদের পর পর্যটক সংখ্যা বেড়েছে। আমাদের হিসাবে সোমবার পর্যটন কমপ্লেক্সের নৌঘাটে প্রায় এক শত নৌযান ভাড়া হয়েছে। আশা করি পর্যটন মৌসুমে রাঙামাটিতে পর্যটকের ঢল নামবে।’

রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের পরদিন থেকে শহরে পর্যটক বেড়েছে। হ্রদে ভ্রমণের জন্য দৈনিক ৩০০ থেকে ৪০০ পর্যটক আসছেন।

এদিকে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সাজেক ইউনিয়নের রুইলুই পর্যটনকেন্দ্রও পর্যটকের ভিড় বেড়েছে। গত সোমবার সেখানে দেড় হাজারের বেশি পর্যটক এসেছে বলে জানান রুইলুই রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ন দেব বর্মণ। তিনি বলেন, এখানকার ৬৭টি রিসোর্ট-কটেজের সবগুলোই ছিল পর্যটকে পূর্ণ। অনেক পর্যটক রাস্তার পাশে তাবু খাটিয়ে থেকেছেন।