৫ সপ্তাহে ৩৯ নারীর নিরাপদ প্রসব

প্রতিষ্ঠার ৪৬ বছর পর কক্সবাজারের মহেশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতিসেবা চালু হওয়ায় সেবা পাচ্ছেন নারীরা। গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই সেবা চালুর পর গত পাঁচ সপ্তাহে ৩৯ জন নারীর নিরাপদ সন্তান প্রসব হয়েছে। তবে হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসক না থাকায় জটিল প্রসূতি রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সহায়তায় ছয়জন মিডওয়াইফ প্রসূতিসেবা দিচ্ছেন।

১৯৮১ সালে মহেশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার পর লোকবল-সংকটের কারণে প্রসূতিসেবা চালু করা সম্ভব হয়নি। ৩১ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স¬ ২০০৬ সালের ১ জুন ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। এ জন্য প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই ভবনে প্রসূতি রোগীদের জন্য আলাদা তিনটি কক্ষও তৈরি করা হয়। কিন্তু পর্যাপ্ত সেবিকার অভাবে এত দিন প্রসূতিসেবা চালু করা যায়নি। ফলে দ্বীপের প্রসূতি নারীদের বাধ্য হয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে যেতে হতো।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রসূতিসেবা চালু করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় দুজন মিডওয়াইফ (দক্ষ ধাত্রী)। এরপর গত মাসে আরও চারজন মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়া হয়। বর্তমানে ছয়জন মিডওয়াইফ প্রসূতিসেবা দিচ্ছেন বলে জানান মহেশখালী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মাহফুজুল হক বলেন, গত ৩৯ দিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩৯ জন গর্ভবতী নারী সন্তান প্রসব করেন। কিন্তু গাইনি চিকিৎসক না থাকায় জটিল ১০ জন প্রসূতি নারীকে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, একজন গাইনি চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হলে জটিল প্রসূতি রোগীকে প্রসবোত্তর সেবা দেওয়া সম্ভব হতো।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ৪৬ বছর আগে এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু লোকবল-সংকটের কারণে হাসপাতাল প্রসূতিসেবা চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে ছয়জন মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়ার পর গত জুলাই মাসের শেষের দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসূতিসেবা চালু করা সম্ভব হয়েছে। ফলে এখন থেকে এই এলাকার প্রসূতি নারীদের সেবা নিতে আর সাগর পাড়ি দিয়ে কক্সবাজার সদরে যেতে হবে না।