ভোটে সেনা চায় ইসলামী আন্দোলন ও ইসলামী ফ্রন্ট

আজকের সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। পাশে আরেক কমিশনার বেগম কবিতা খানম। ছবি: ফোকাস বাংলা
আজকের সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। পাশে আরেক কমিশনার বেগম কবিতা খানম। ছবি: ফোকাস বাংলা

সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও ইসলামী ফ্রন্ট। এ জন্য আইন সংশোধনেরও দাবি জানিয়েছে দল দুটি।

আজ রোববার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে পৃথক সংলাপে দল দুটির পক্ষ থেকে এমন দাবি জানানো হয়। সকালে ইসলামী ফ্রন্ট ও বিকেলে ইসলামী আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করে কমিশন। সংলাপে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১০ দফা এবং ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে ১৫ দফা সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সংলাপ হবে।
বিকেলে ইসির সঙ্গে বৈঠকে আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিপক্ষে ও সেনা মোতায়েনের পক্ষে মত দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। পাশাপাশি সুষ্ঠু নির্বাচনে ব্যর্থ হলে নির্বাচন কমিশনকে আইনের আওতায় আনতে আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে তারা।
দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মো. মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল সংলাপে অংশ নেন। পরে মাদানী সাংবাদিকদের কাছে সুপারিশগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন করলে ইসিকে আইনের আওতায় আনতে আইনি কাঠামো প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া সংসদ ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করা, অনলাইনের মনোনয়ন দাখিল, নির্বাচনী জামানত ১০ হাজার টাকা, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনপদ্ধতি প্রণয়ন, নির্বাচনী ব্যয় কমানো, সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানানো হয়েছে।
সকালে ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির ১২ সদস্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে বসে। সেখানে তারা দলের লিখিত সুপারিশ কমিশনকে দেয়। দলটির দেওয়া সুপারিশের মধ্যে আছে নির্বাচনের সময় সেনা মোতায়েন, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইসির হাতে রাখা। তবে দলটি ২০২০ সালের মধ্যে দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বিরোধিতা করেছে। দলটি বাতিল করার পক্ষে মত দিয়েছে।
বৈঠক শেষে ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব আবদুল মতিন সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ১০ দফা সুপারিশ জানিয়েছেন। ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব না রাখতে চাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব কমিটিতে এই সংখ্যক নারী প্রতিনিধি রাখার আইন বাস্তবসম্মত নয়। এ কারণে তাঁরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছেন, এই আইন বাতিল করে বরং প্রত্যেক দলে নারীদের জন্য আলাদা অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন  সামনে নির্বাচন কমিশন গত ২৪ আগস্ট থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে। আজকের দুটিসহ কমিশন মোট সাতটি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। এর আগে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে গত ৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করে।
দুটি দলের সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা সভাপতিত্ব করেন। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও বেগম কবিতা খানম এবং ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।