পানি সরবরাহ বন্ধ, দুটি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়ল ৫০ জন

প্রশাসনের নির্দেশ সত্ত্বেও রাঙামাটির মোনঘর ভাবনাকেন্দ্র ছাড়েনি ক্ষতিগ্রস্ত এসব লোকজন। ছবিটি গতকাল সন্ধ্যায় তোলা l প্রথম আলো
প্রশাসনের নির্দেশ সত্ত্বেও রাঙামাটির মোনঘর ভাবনাকেন্দ্র ছাড়েনি ক্ষতিগ্রস্ত এসব লোকজন। ছবিটি গতকাল সন্ধ্যায় তোলা l প্রথম আলো

রাঙামাটির দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে গত রোববার থেকে পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আশ্রয়-কেন্দ্র দুটি ছেড়ে চলে গেছে অবশিষ্ট ৫০ জন মানুষ। বন্ধ করে দেওয়ার চার দিন পরও তারা জিমনেশিয়াম ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস আশ্রয়কেন্দ্রে রয়ে গিয়েছিল। তবে মোনঘর ভাবনাকেন্দ্রে এখনো ৬০টি পরিবারের ২১০ জন মানুষ রয়েছে।
আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্ধ করে দেওয়ার পরও ১৯৮ জন মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র তিনটিতে রয়ে যায়। এর মধ্যে জিমনেশিয়াম ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস আশ্রয়কেন্দ্রে ছিল ১৯২ জন। মোনঘর ভাবনাকেন্দ্রে ছিল ছয়জন। এর পরদিন শুক্রবার সকালে জিমনেশিয়াম ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ১৪২ জন চলে যায়, আর ওই দিন মোনঘর ভাবনাকেন্দ্রে ফিরে আসে ২০৪ জন। গতকাল রাত পর্যন্ত তারা ওই আশ্রয়কেন্দ্রে ছিল।
গতকাল জিমনেশিয়াম ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে বাধ্য হওয়া লোকজনের অভিযোগ, তাঁদের বাড়িঘর এখনো বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে। কোথাও যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার পরও তাঁরা রয়ে গিয়েছিলেন। এই দুই আশ্রয়কেন্দ্রে নিজস্ব পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। এত দিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাড়িতে করে পানি সরবরাহ করা হতো। কিন্তু গত রোববার থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় সরবরাহ করা পানি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। এতে আশ্রয় নেওয়া মানুষ চরম পানি সংকটে পড়েন।
গতকাল জিমনেশিয়াম আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়া জগদীশ চাকমা ও হিরো বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিনই বৃষ্টি হওয়ায় বিধ্বস্ত বাড়িঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। ভেবেছিলেন বৃষ্টি কমে গেলে ফিরে যাবেন। বৃহস্পতিবার থেকে খাবার সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলেও কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে এ কয়েক দিন পার করেছেন। কিন্তু রোববার থেকে প্রশাসন পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বাধ্য হয়ে আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে হয়েছে। এখন কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না।
এদিকে মোনঘর ভাবনাকেন্দ্রে পানির সমস্যা না থাকলেও প্রশাসনের কাছ থেকে খাবার সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে আশ্রিতরা। আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লাভলী চাকমা ও রিতা চাকমা বলেন, প্রশাসন থেকে তাঁদের কোনো খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে না। অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
পানি ও খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মানজারুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, প্রশাসন বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সব আশ্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। প্রশাসনের হিসেবে আর কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। সে কারণে পানি ও খাবার সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।