জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবে বাংলাদেশ

প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন
প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের বৃহত্তর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় এই অধিবেশনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অধিবেশনে তাঁর অংশগ্রহণ বিষয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানানো হয়।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত ওই প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন।

স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫২ সদস্যবিশিষ্ট বাংলাদেশ সরকারি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন।

রোহিঙ্গা সমস্যার কথা উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, ‘এবারের অধিবেশনে এ সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন অর্জন আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। নিরাপত্তা পরিষদ থেকে এ বিষয়ে যে বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, তা গত নয় বছরে মিয়ানমার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের প্রদত্ত প্রথম বক্তব্য। এটি সম্ভব হয়েছে আমাদের সর্বাত্মক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কারণে। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এবারের জাতিসংঘে উপস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ে এ বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের বৃহত্তর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করব।’

স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘বর্তমান পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রক্ষায় জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব এই সংস্থার সংস্কার কার্যক্রমের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৮ সেপ্টেম্বর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন। সেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবসহ অনেকের সঙ্গে আমাদের প্রধানমন্ত্রীও উপস্থিত থাকবেন।’

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের নিয়ে একটি প্ল্যাটফর্ম গঠন করা হচ্ছে। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় ভূমিকার স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ মহাসচিব আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী টেকসই শিল্পায়ন, শোভন ও যথোচিত কর্ম এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিষয়গুলো তুলে ধরে বক্তব্য দেবেন।’

১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাবিষয়ক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টসহ ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর নেতারা এতে যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর জোরালো সমর্থন কামনা করবেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ সেপ্টেম্বর শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের একটি সভায় বক্তব্য দেবেন। তিনি বাংলাদেশের শান্তিরক্ষায় সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ক্রমাগত উন্নতির বিষয়টি তুলে ধরবেন এবং আঞ্চলিক শান্তি রক্ষায় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের ওপর জোর দেবেন। ২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দেবেন।