'শরীর চিকন', ফোকর দিয়ে পালাল আসামি!

নেত্রকোনার পূর্বধলায় হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামি পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন। আজ বুধবার ভোরের এই ঘটনায় দুপুর পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পায়নি পুলিশ। দায়িত্বে অবহেলার কারণে পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।

পলাতক আসামির নাম রুবেল মিয়া (২৫)। তিনি পূর্বধলার গরুয়াকান্দা গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে। গত সোমবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অভি রঞ্জন দেব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ ভোর চারটার দিকে আসামি রুবেল শৌচাগারে যান। পরে শৌচাগারের বায়ু চলাচলের ফোকর দিয়ে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান। ফোকরের লোহার রডগুলোতে জং ধরায় ও আসামির শরীর চিকন হওয়ায় তিনি সহজে পালাতে পেরেছেন।’

গত ৪ মে নেত্রকোনায় চুরির মামলায় রিমান্ডের এক আসামি পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে গেছেন। পুলিশ জানিয়েছিল, ‘হাত চিকন’, তাই হাতকড়া খুলে পালিয়েছে আসামি। ওই ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।

ওসি বলেন, আজকের ঘটনার সময় থানায় কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক এস এম মোজাম্মেল ছিলেন। এ ছাড়া ওই আসামির দায়িত্বে তফাজ্জল হোসেন, মানিক মিয়া, মাসুদ রানা, ও কামরুল ইসলাম নামে চারজন পুলিশ সদস্য ছিলেন। তাঁদের মধ্যে তফাজ্জল হোসেন সার্বক্ষণিক দায়িত্বে ছিলেন।

নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুল আলম বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পলাতক ওই আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। পালিয়ে যাওয়ায় তাঁর নামে আরও একটি মামলা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রুবেল পূর্বধলার গায়লাপাড়া গ্রামের কাকন মিয়া (২৫) হত্যাকাণ্ডের আসামি। গত ২৫ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে পূর্বধলা-ডেওটুকোন সড়কে কাকনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। পরদিন সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাকনের মৃত্যু হয়। এ খবর শুনে কাকনের বাবা আবুল কাশেমও (৬৫) ওই রাতে মারা যান।

পরে কাকনের বড় ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন। ২৮ আগস্ট রাতে জড়িত অভিযোগে ময়নুদ্দিন রহমান (২২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। তাঁর স্বীকারোক্তিতে গত সোমবার সন্ধ্যায় রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর নামে দুর্গাপুর থানায় আরও একটি হত্যা মামলা রয়েছে।