বরিশালে বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা, আটক ৮

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বরিশাল নগরের জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংর্ঘষ হয়। ছবিটি শনিবার সকালে তোলা। ছবি: সাইয়ান
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বরিশাল নগরের জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংর্ঘষ হয়। ছবিটি শনিবার সকালে তোলা। ছবি: সাইয়ান

বরিশালে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিপেটা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিছিলে বাধা দেওয়ায় বিএনপি নেতারা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে পুলিশ লাঠিপেটা করে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে আটজনকে। পরে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সদর রোডে যানবাহনে ভাঙচুর চালান।

আজ শনিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে নগরের অশ্বিনী কুমার হল-সংলগ্ন জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয় চত্বর থেকে মিছিল বের করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে বরিশাল মহানগর বিএনপি, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি পৃথক বিক্ষোভ মিছিল শুরুর পরপরই ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সকাল ১০টা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। বেলা পৌনে ১১টার দিকে মিছিল বের করতে চাইলে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পুলিশের বাধা অতিক্রম করে মিছিল করতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় বিএনপি নেতা-কর্মীরা সড়কে কয়েকটি যানবাহন ও সড়কের পাশের কিছু দোকানে ভাঙচুর চালান। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিপেটা করে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পুলিশের লাঠিপেটায় কমপক্ষে ১৫ নেতা-কর্মী আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিএনপির ৮ নেতা-কর্মীকে আটক করে।

আটককৃতরা হলেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কাউন্সিলর মীর জাহিদুল কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান পিন্টু, জেলা যুবদলের সহসভাপতি মামুন রেজা খান, কোতোয়ালি যুবদলের সমাজকল্যাণ সম্পাদক অলিউর রহমান ও সদস্য মো. আসলাম। বাকি তিনজনের নাম জানা যায়নি।

জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজউদ্দিন বাবলু বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি অশ্বিনী কুমার হলের সামনে সমাবেশ করে। একই সময় মহানগর বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিতে মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক কাউন্সিলর মীর জাহিদুল কবিরের নেতৃত্বে একটি মিছিল সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল। অশ্বিনী কুমার হলের প্রধান ফটকে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এ নিয়ে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পুলিশ অতর্কিতে তাদের ওপর লাঠিপেটা শুরু করে। একই সময়ে উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল সদর রোডে নামলে তাদের ওপরও লাঠিপেটা করে পুলিশ। পুলিশের লাঠিপেটায় ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। ছবিটি শনিবার সকালে বরিশাল নগরের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো
সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ। ছবিটি শনিবার সকালে বরিশাল নগরের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার অভিযোগ করেন, বিনা উসকানিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। পুলিশি নির্যাতনের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপিকে দুর্বল করা যাবে না।

এ ব্যাপারে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির সমাবেশ ও মিছিল করার অনুমতি ছিল না। তারপরও মিছিলে বাধা দেওয়া হয়নি। একপর্যায়ে তারা সদর রোডে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় তাদের মিছিল করতে দেওয়া হয়নি। সেখান থেকে আটজনকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হবে।