রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের প্রতিক্রিয়া

মামলার রায়ে আসামিপক্ষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। তাদের দাবি, এ রায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবে। অন্যদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। এ রায়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
হাই প্রোফাইল পলিটিক্যাল রায়: আসামিপক্ষ
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ রায়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই রায়কে তিনি পলিটিকেল জাজমেন্ট হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি হাই প্রোফাইল মামলা। রায়টি হাই প্রোফাইল পলিটিক্যাল জাজমেন্ট। এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ।’
কামরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘কোনো চোরাচালান মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় বাংলাদেশে রেকর্ড। তাই আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব।’
আসামিপক্ষের এই আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি। তবু তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া, যে জাহাজে করে এসব অস্ত্র এসেছে, সেই জাহাজের মালিককে হাজির করা হয়নি। এ রায় নজিরবিহীন। আমরা সংক্ষুব্ধ।’
আমরা সন্তুষ্ট: রাষ্ট্রপক্ষ
রায় ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘চাঞ্চল্যকর ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাকে সাধারণ মামলা হিসেবে বিবেচনা করার সুযোগ নেই। এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও নজিরবিহীন ঘটনা। আদালত তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর আর কোথাও ঘটেছে কি না, সন্দেহ! তাই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।’
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি কামাল উদ্দিন আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত বলেছেন, অস্ত্রগুলো বাংলাদেশের সিইউএফএলের জেটিতে খালাস করে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার জন্য নিয়ে যাওয়ার একটি পরিকল্পনা ছিল। বিষয়টি মাননীয় আদালতের কাছে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মাননীয় আদালত তাঁর সংক্ষিপ্ত সারসংক্ষেপে বলেছেন, এই মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তৎকালীন সরকারের দুজন মন্ত্রী ও গোয়েন্দা সংস্থার উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। মাননীয় আদালতের কাছে এ ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণ করতে পেরেছে।’
আসামিপক্ষের ‘পলিটিক্যাল রায়’ প্রসঙ্গে কামাল উদ্দিন বলেছেন, ‘এই মামলার আসামিরা যেমন হাই প্রোফাইল, তেমনি সাক্ষীরাও। সাক্ষীরা সবাই তৎকালীন সরকারের উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা। তাঁরা রাজনৈতিক সাক্ষী নন। তাঁদের সাক্ষ্য মূল্যায়ন করেই মাননীয় আদালত জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। সুতরাং এখানে কাউকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করার সুযোগ নেই।’