আজ যে রাস্তাগুলো এড়িয়ে চলবেন

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ইউনেসকোর বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আজ শনিবার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকায় আনন্দ শোভাযাত্রা করবেন। শোভাযাত্রা শেষে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকছে নানা অনুষ্ঠান।

কর্মসূচির কারণে দুপুর থেকে রাজধানীর কিছু রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগও নগরবাসীকে শোভাযাত্রার ‘রুট ম্যাপ’ দেখে চলাচলের অনুরোধ জানিয়েছে।

দিনব্যাপী কর্মসূচি চলার কারণে শাহবাগ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের এলাকার সড়কগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। এ ছাড়া দুপুরের দিকে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসার পথ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা।

ডিএমপি থেকে পাওয়া ম্যাপ অনুযায়ী আজ আনন্দ শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে শুরু হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রার রুট হলো বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর থেকে শুরু করে মিরপুর রোডের রাসেল স্কয়ার দিয়ে কলাবাগান হয়ে সায়েন্স ল্যাব থেকে বাঁয়ে মোড় নিয়ে বাটা সিগন্যাল-কাঁটাবন ক্রসিং হয়ে শাহবাগ। শাহবাগ থেকে ডানে মোড় নিয়ে চারুকলা অনুষদের বিপরীত পাশে ছবির হাট হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে শোভাযাত্রা শেষ হবে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশের ক্ষেত্রে ছবির হাট গেট (চারুকলার বিপরীতে), টিএসসি গেট (বাংলা একাডেমির বিপরীতে), কালীমন্দির গেট ও তিন নেতার মাজার গেট ব্যবহার করবেন অংশগ্রহণকারীরা।

সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন, বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোতেও এই স্বীকৃতি উদ্‌যাপনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ডিএমপির সৌজন্য।
ডিএমপির সৌজন্য।

কর্মসূচি অনুযায়ী ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে দুপুর ১২টায় ঢাকা মহানগরের অনুষ্ঠান শুরু হবে। দুপুর ১২টার আগেই সেখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জড়ো হবেন। এ ছাড়া অন্যান্য স্থান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশস্থলে যাবেন। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটির পাশাপাশি থাকছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লেজার শো।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোর, জনপ্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সর্বস্তরের জনসাধারণ অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়গুলো বিভিন্ন অধিদপ্তরকে একই নির্দেশ দিয়েছে।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। গত ৩১ অক্টোবর এই স্বীকৃতি দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণে বলা হয়েছিল, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’—এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে তা বিশ্বের সম্পদ হিসেবে স্থায়ী আসন পায়।

এ স্বীকৃতি পেতে ইউনেসকোকে প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিল সরবরাহ করেছেন ফ্রান্সের প্যারিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শহিদুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। এ জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই স্বীকৃতির সপক্ষে ১০টি প্রয়োজনীয় নথি, প্রমাণপত্র ও তথ্য জমা দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তথ্য মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করে।