ফরমের টাকা নিয়ে পিয়ন উধাও!

তিন বছর ধরে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের ইসলামি শিক্ষা বিভাগে মাস্টাররোলে পিয়ন পদে কাজ করছিলেন ওসমান গনি। করিৎকর্মা হিসেবে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সেই আস্থা এতটাই ছিল যে বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে ১৭ শিক্ষার্থী ৮০ হাজার টাকা তাঁর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। গত বুধবার পরীক্ষা দিতে এসে ওই শিক্ষার্থীরা দেখেন, তাঁদের পরীক্ষার ফরমই পূরণ হয়নি। টাকা নেওয়া ওসমান গনিরও কোনো হদিস নেই।

ফরম পূরণ না হওয়ায় ইসলামি শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ১৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজের বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে এক জরুরি বৈঠকে ওসমান গনিকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ইসলামি শিক্ষা বিভাগে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষে ১৬৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। গত বুধবার বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়। বেলা একটার দিকে পরীক্ষা দিতে এসে ১৭ শিক্ষার্থী প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন।

ইসলামি শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ফারুক হোসেনসহ চারজন শিক্ষার্থী বলেন, শিওর ক্যাশের (মোবাইল ব্যাংকিং) মাধ্যমে টাকা জমা দেওয়ার ঝামেলা এড়াতে ১৭ শিক্ষার্থী ফরম পূরণের জন্য ৮০ হাজার টাকা ওসমান গনিকে দেন। পরীক্ষা শুরুর আগের দিন গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র নিতে কলেজে আসেন। এ সময় ওসমান তাঁদের বুধবার পরীক্ষা শুরুর আগে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে বলে জানান। বুধবার সকালে প্রবেশপত্র নিতে এসে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন তাঁরা। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ওসমানের খোঁজ পাননি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ওসমান গনির মুঠোফোনে চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন পাঠান বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ওসমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ তাঁরা পাননি।