বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় জহুরুল

টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন জহুরুল হক। ছবি: প্রথম আলো
টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছেন জহুরুল হক। ছবি: প্রথম আলো

জহুরুল হকের বাবা একসময় দিনমজুর ছিলেন। অসুস্থতার কারণে আর কাজ করতে পারেন না। সংসার চলছে এখন মায়ের রোজগারে। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছেন জহুরুল। কিন্তু টাকার অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

জহুরুল হকের (২০) বাড়ি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর বড়গোলা গ্রামে। পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জহুরুল সবার ছোট। ভাইয়েরা সবাই বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছেন। দুই বোনকে নিয়ে জহুরুল থাকেন বাবা-মায়ের সঙ্গে। মা জসিমা বেগম খেতখামারে কাজ করে যে এক-দেড় শ টাকা আয় করেন, তা দিয়ে ঠিকমতো দুবেলা খাবার জোটে না।

তবে দারিদ্র্যের মধ্যে দমে যাননি জহুরুল। পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও এবার তারাগঞ্জ ও/এ ডিগ্রি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ পেয়েছেন জহুরুল। এ বছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ‘এ’ ইউনিটে মেধাতালিকায় ১৫৩তম এবং হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সি’ ইউনিটে ৭৫তম স্থান অধিকার করেছেন তিনি।

হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চান জহুরুল। ভর্তি হতে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাগবে বলে তিনি শুনেছেন। কিন্তু এত টাকা তাঁর দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে দেওয়া অসম্ভব। তাই পড়ার খরচ ও ভর্তির টাকা জোগানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।

জহুরুলের বাবা মো. জপির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মোর ছয় শতক বসতভিটে ছাড়া কিছু নাই। মোর স্ত্রী কামোত গেইলে প্যাটোত ভাত জোটে, না হইলে দিন উপোসে কাটে। ছেলেটা মোর খায়া, না খায়া নেকাপড়া করছে। এ্যালা বড় কলেজোত ভর্তি হবার চান্স পাইছে। কিন্তুক ছাওয়াটাক ওটে কোনা পড়ার মোর সামর্থ্য নাই।’

তারাগঞ্জ ও/এ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল বারি মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, জহুরুল অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী। কিন্তু টাকার অভাবে ভর্তি হতে পারছে না। সমাজের সহৃদয় ও বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন, তাহলে জহুরুল বিশ্ববিদ্যায়ে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারবে।

জহুরুল হককে সহায়তা পাঠানোর উপায়—

বিকাশ নম্বর: ০১৯৪৫২১৩০৪৮