শুনানির পরও রায়ে দেরির দায় বিচারকের: রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি: প্রথম আলো
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি: প্রথম আলো

যুক্তিতর্ক শুনানির পরও রায় প্রকাশে দেরির দায় বিচারককে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি মামলার শুনানি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আদেশ বা রায়ের সারাংশ ঘোষণা এবং যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে আদেশের তারিখ ঘোষণা করতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচারে কাঙ্ক্ষিত গতি আনার জন্য পর্যাপ্ত বিচারকক্ষ, বিচারকদের শূন্য পদে নিয়োগ এবং বিচারক ও মোকদ্দমার সংখ্যায় যুক্তিসংগত ভারসাম্য রক্ষা করা আবশ্যক।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে উদ্ধৃত করে বাসসের খবরে বলা হয়, ‘মোকদ্দমার যুক্তিতর্ক শুনানির পর যখন রায় প্রকাশে বিলম্ব হয়, তখন সে বিলম্বের একক দায় সংশ্লিষ্ট বিচারককেই নিতে হবে।’ তাই বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা জোরদারে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে বিচারপতিদের প্রতি তিনি নির্দেশ দেন। খবর বাসসের।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ‘জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলন-২০১৭’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আজ শনিবার তিনি এ কথা বলেন। বাসসের খবরে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের প্রায় দেড় হাজার বিচারক দিনব্যাপী এই সম্মেলনে যোগ দেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচার বিভাগ বর্তমানে বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত এবং মামলাজট সমস্যার মোকাবিলা করছে। তিনি বলেন, ‘আদালত মানুষের শেষ ভরসার স্থল। ন্যায়বিচার পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ দারিদ্র্য, অশিক্ষা ও নানা জটিলতার কারণে অনেক সময় মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। সনাতন পদ্ধতির আদালত ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি আদালতের ভৌত অবকাঠামোর অপর্যাপ্ততা, পুরোনো স্থাপনা ইত্যাদির কারণে সুষ্ঠুভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করা অনেক সময় কষ্টকর হয়ে পড়ে।’

বিচারে কাঙ্ক্ষিত গতি আনার জন্য পর্যাপ্ত বিচারকক্ষ, বিচারকদের শূন্যপদে নিয়োগ এবং বিচারক ও মোকদ্দমার সংখ্যায় যুক্তিসংগত ভারসাম্য রক্ষা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে মামলা নিষ্পত্তির সংখ্যা আশাব্যঞ্জক। সরকার এরই মধ্যে বিচারালয়ের অবকাঠামো নির্মাণে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিচারকেরা একটি উন্নত পরিবেশে কাজ করতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইনসচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বিকাশ কুমার সাহা প্রমুখ বক্তব্য দেন।