এ বড় মর্মান্তিক

শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ে। একা একা ট্রেন থেকে নামতে পারবে না। এ জন্য মেয়েটিকে আনতে স্টেশনে গিয়েছিলেন ভ্যানচালক বাবা গোলাম মোস্তফা। ট্রেনের জানালা দিয়ে কামরায় উঁকি দিচ্ছিলেন। মেয়েকে হন্য হয়ে খুঁজছিলেন। একসময় ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। টাল সামলাতে না পেরে তিনি ট্রেনের নিচে পড়ে যান, সঙ্গে সঙ্গে দুই টুকরো।

 গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঘটে এই দুর্ঘটনা। গোলাম মোস্তফার (৪০) বাড়ি মহেশপুর উপজেলার জলুলী গ্রামে। তাঁর প্রতিবন্ধী মেয়েটির নাম ফাতেমা আক্তার (১৪)। বাবার এই মর্মান্তিক মৃত্যুতে সে শোকে পাথর হয়ে গেছে।

গোলাম মোস্তফার ভাই আবু তালেব বলেন, ফাতেমা ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারত না। তার সবকিছু দেখাশোনা করতেন মোস্তফা। মেয়েটি ছিল তাঁর প্রাণ। আর মেয়েটি বাবা ছাড়া কিছুই বোঝে না। বাবাকে হারিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে সে।

গোলাম মোস্তফার শাশুড়ি জাহানারা খাতুন বলেন, ফাতেমাকে খুলনার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে নাতিকে নিয়ে তিনি সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনে ওঠেন। তাঁরা ছিলেন ট্রেনের পেছনের দিকের একটি কামরায়। কোটচাঁদপুর স্টেশনে ট্রেন থামে। তিনি জামাতা মোস্তফার জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। কিন্তু তাঁর দেখা না পেয়ে কষ্ট করে ফাতেমাকে নিয়ে প্ল্যাটফর্মে নামেন। মোস্তফা তখন ট্রেনের সামনের অংশে তাঁদের খোঁজ করছিলেন। এ জন্য দেখা হয়নি। আর কোনো দিন দেখা হবেও না।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্টেশনমাস্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, ওই ব্যক্তি ট্রেনের হাতল পিছলে নিচে পড়ে যান। কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।